যুদ্ধক্ষেত্রে কি কোন মানবাধিকার রয়েছে

প্রশ্ন                                                                                                         

বর্তমানে এক দেশ আরেক দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে চলছে। এ জন্য দেখা যায় যুদ্ধে যারা দুর্বল শক্তি তারা খাদ্য বস্ত্র সহ বিভিন্ন সমস্যা জর্জরিত হয়ে আছে। আমি জানতে চাচ্ছি, যুদ্ধক্ষেত্রে মানবাধিকার সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?

উত্তর                                                                                                       

بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما

জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার পর থেকে গোটা পৃথিবীতে বহু যুদ্ধ বিগ্রহ সংঘটিত হয়েছে। পৃথিবীর বড় বড় রাষ্ট্র যারা মানবাধিকারের কথা বলে থাকে তারাই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। কিন্তু মানবতার নবী রাসূল (সা.) যুদ্ধক্ষেত্রেও মানবাধিকারের প্রতি লক্ষ্য রাখতে বলেছেন। রাসূল (সা.) যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুপক্ষকে ‘মুছলা’ করতে নিষেধ করেছেন। [আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৯/১৯৮]

মুছলা বলা হয়, যুদ্ধে নিহত ব্যক্তিদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে নেওয়া ৷

আরেক হাদিসে এসেছে রাসূল (সা.) যুদ্ধক্ষেত্রে নারী, শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও গির্জার পাদ্রীদের হত্যা করতে নিষেধ করেছেন,

لَا تَقْتُلُوا صَبِيًّا، وَلَا امْرَأَةً، وَلَا شَيْخًا كَبِيرًا، وَلَا مَرِيضًا، وَلَا رَاهِبًا

‘তোমরা যুদ্ধক্ষেত্রে শিশু, নারী, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও গির্জার পাদ্রীদের হত্যা করো না।’ [সুনানে কুবরা লিল বায়হাকী, হাদিস: ১৮১৫২]

এ থেকেই বুঝা যায়, রাসূল (সা.) মানবাধিকার রক্ষার প্রতি কতটুকু গুরুত্বারোপ করেছেন। এটি আধুনিক বিশ্বের জন্য একটি মেসেজ। বর্তমানে যুদ্ধের সময় মানুষের কোনো অধিকার থাকে না। চরমভাবে মানুষের অধিকার ক্ষুন্ন হয়। অথচ রাসূল (সা.) ও খোলাফায়ে রাশেদীন আমল করে দেখিয়ে গিয়েছেন কিভাবে মানবাধিকার রক্ষা করতে হয়।

সুতরাং ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে রাসূল (সা.) কর্তৃক গৃহীত মানবাধিকারগুলো আমরা যদি বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে সারা বিশ্বে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে।

আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।

و الله تعالى أعلم بالصواب

وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم

উত্তর দিচ্ছেন: ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী সূত্রhttps://www.drkhalilurrahman.com/7823/article-details.html