মানুষ বা প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণ করা কি বৈধ

প্রশ্ন                                                                                                         

বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রে দেখা যায়,মানুষ বা প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কী?

উত্তর                                                                                                       

بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما

ইসলামে কোনো মানুষ বা প্রাণীর মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণ করা কঠিন কবিরা গুনাহ ও হারাম। কুরআন হাদিসে মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণ করার ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। তাই কোনো মানুষ বা প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণ করা কোনোক্রমেই বৈধ হবে না। চাই তা কোনো মুসলিম নামধারী রাষ্ট্রেই হোক না কেন।

আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে ইরশাদ করেন,

فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْاَوْثَانِ وَ اجْتَنِبُوْا قَوْلَ الزُّوْرِۙ

‘তোমরা পরিহার কর অপবিত্র বস্তু অর্থাৎ মূর্তিসমূহ এবং পরিহার কর মিথ্যাকথন।’[সূরা হজ্জ, আয়াত: ৩০]

অন্য আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে,

وَ قَالُوْا لَا تَذَرُنَّ اٰلِهَتَكُمْ وَ لَا تَذَرُنَّ وَدًّا وَّ لَا سُوَاعًا ۙ۬ وَّ لَا یَغُوْثَ وَ یَعُوْقَ وَ نَسْرًاۚ

‘এবং তারা বলেছিল, তোমরা কখনো পরিত্যাগ করো না তোমাদের উপাস্যদেরকে এবং কখনো পরিত্যাগ করো না ওয়াদ্দ, সুওয়া, ইয়াগূছ, ইয়াঊক ও নাসরকে।’[সূরা নূহ, আয়াত: ২৩]

এই আয়াতে কাফেরদের দু’টি বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হয়েছে, ১. তাদের মিথ্যা উপাস্যদের পরিত্যাগ না করা এবং ২. তাদের নির্মিত মূর্তি ও ভাস্কর্যগুলোকে ত্যাগ না করা।

ইবনে আব্বাস (রা.) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন,

‘এগুলো হচ্ছে নূহ আ.-এর সম্প্রদায়ের কিছু পুণ্যবান লোকের নাম। তারা যখন মৃত্যুবরণ করেছে তখন শয়তান তাদের সম্প্রদায়কে এই কুমন্ত্রণা দিয়েছে যে, তাদের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলোতে মূর্তি স্থাপন করা হোক এবং তাদের নামে সেগুলোকে নামকরণ করা হোক। লোকেরা এমনই করল। ওই প্রজন্ম যদিও এই সব মূর্তির পূজা করেনি কিন্তু ধীরে ধীরে প্রকৃত বিষয় অস্পষ্ট হয়ে গেল এবং পরবর্তী প্রজন্ম তাদের পূজায় লিপ্ত হল।’[সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৯২০]

হাদিস শরিফে এসেছে,

‘হযরত আমর ইবনে আবাসা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা আমাকে প্রেরণ করেছেন আত্মীয়তার সর্ম্পক বজায় রাখার, মূর্তিসমূহ ভেঙ্গে ফেলার, এবং এক আল্লাহর ইবাদত করার ও তাঁর সঙ্গে অন্য কোনো কিছুকে শরীক না করার বিধান দিয়ে।’[সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮৩২]

আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।

و الله تعالى أعلم بالصواب

وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم

উত্তর দিচ্ছেন: ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী সূত্রhttp://www.drkhalilurrahman.com/4644/article-details.html