মানুষের জান ও মালের নিরাপত্তা সম্পর্কে ইসলাম কী বলে

প্রশ্ন                                                                                                         

মানুষের জান ও মালের নিরাপত্তা সম্পর্কে ইসলামের বিধান কুরআন হাদিসের রেফারেন্সসহ জানতে চাচ্ছি

উত্তর                                                                                                       

بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما

ইসলাম মানবরচিত কোনো ধর্ম নয়। বরং আল্লাহপ্রদত্ত কেয়ামত পর্যন্ত আগত সকল মানুষের জন্য পূর্ণাঙ্গ এক ধর্ম। একমাত্র ইসলাম ধর্মেই মানুষের জান ও মালের পরিপূর্ণ নিরাপত্তা প্রদান করা হয়েছে, যা অন্য কোনো ধর্ম ও মত প্রদান করতে পারেনি। কুরআন হাদিসের বক্তব্য থেকেই বিষয়টি স্পষ্টভাবে বুঝা আসে। নিম্নে কুরআন হাদিসের কিছু রেফারেন্স উল্লেখ করা হলো,

আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে ইরশাদ করেন,

وَ یَسۡعَوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ فَسَادًا ؕ وَ اللّٰہُ لَا یُحِبُّ الۡمُفۡسِدِیۡنَ

‘তারা ভূ-পৃষ্ঠে অশান্তি ছড়িয়ে বেড়ায়; আর আল্লাহ অশান্তি বিস্তারকারীদেরকে ভালোবাসেননা।’ [সূরা মায়েদা, আয়াত: ৬৪]

অন্য আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে,

وَ لَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ بَعۡدَ اِصۡلَاحِہَا وَ ادۡعُوۡہُ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا ؕ اِنَّ رَحۡمَتَ اللّٰہِ قَرِیۡبٌ مِّنَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ

‘আর তোমরা যমীনে ফাসাদ করো না তার সংশোধনের পর এবং তাঁকে ডাক ভয় ও আশা নিয়ে। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ [সূরা আরাফ, আয়াত: ৫৬]

আরেক আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে,

وَ مَنۡ یَّقۡتُلۡ مُؤۡمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُہٗ جَہَنَّمُ خٰلِدًا فِیۡہَا وَ غَضِبَ اللّٰہُ عَلَیۡہِ وَ لَعَنَہٗ وَ اَعَدَّ لَہٗ عَذَابًا عَظِیۡمًا

‘আর যে ইচ্ছাকৃত কোনো মুমিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার উপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে লানত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আযাব প্রস্তুত করে রাখবেন।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ৯৩]

অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে,

مَنۡ قَتَلَ نَفۡسًۢا بِغَیۡرِ نَفۡسٍ اَوۡ فَسَادٍ فِی الۡاَرۡضِ فَکَاَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِیۡعًا ؕ وَ مَنۡ اَحۡیَاہَا فَکَاَنَّمَاۤ اَحۡیَا النَّاسَ جَمِیۡعًا

‘যে ব্যক্তি মানুষ হত্যা কিংবা যমীনে সন্ত্রাস সৃষ্টির কারণ ব্যতীত কাউকে হত্যা করবে সে যেন তামাম মানুষকেই হত্যা করল। আর যে মানুষের প্রাণ বাঁচালো, সে যেন তামাম মানুষকে বাঁচালো।’ [সূরা মায়েদা, আয়াত: ৩২]

আরেক আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে,

وَ لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ وَ تُدۡلُوۡا بِہَاۤ اِلَی الۡحُکَّامِ لِتَاۡکُلُوۡا فَرِیۡقًا مِّنۡ اَمۡوَالِ النَّاسِ بِالۡاِثۡمِ وَ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ

‘আর তোমরা অন্যায়ভাবে পরস্পরের মাল গ্রাস করো না এবং জানা সত্ত্বেও অসৎ উপায়ে লোকের মাল গ্রাস করার উদ্দেশে তা বিচারকের নিকট নিয়ে যেও না।’ [সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৮]

হাদিস শরিফে এসেছে,

الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ

‘সেই প্রকৃত মুসলিম, যার জিহ্বা ও হাত হতে সকল মুসলিম নিরাপদ থাকে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ১০]

এছাড়াও কুরআন হাদিসের আরো অসংখ্য স্থানে মানুষের জান ও মালের নিরাপত্তা বিষয়ে বিভিন্ন নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।

و الله تعالى أعلم بالصواب

وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم

উত্তর দিচ্ছেন: ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী সূত্রhttp://www.drkhalilurrahman.com/4626/article-details.html