অন্যের জমিতে তার অনুমতি ছাড়া মসজিদ নির্মাণ করা জায়েয আছে কি?

প্রশ্ন                                                                                         

আমাদের এলাকার মসজিদটি প্রথমে ওয়াকফকৃত ছিল না। বরং প্রবাসী এক ব্যক্তির জায়গার উপর তার অনুমতি না নিয়েই মসজিদ নির্মাণ করা হয়। আমাদের ধারণা ছিল যেহেতু তিনি অনেক দানশীল মানুষ তাই তাকে মসজিদের কথা বললে তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবেই তা ওয়াক্ফ করে দিবেন। কিছুদিন হল তিনি দেশে এসেছেন। তাকে না জানিয়ে তার জায়গার উপর মসজিদ নির্মাণের কারণে মনক্ষুন্ন হন। তবে এলাকায় মসজিদের প্রয়োজন দেখে এবং লোকদের অনুরোধের কারণে ঐ জায়গাকে মসজিদের জন্য প্রথমে মৌখিকভাবে ওয়াকফ করে দেন এবং পরবর্তীতে লিখিত ওয়াকফও করেন। কিন্তু ওয়াকফ দলীলে একটি শর্ত রাখেন এমন যে, ওয়াকফকৃত ভূমি আমার নিজ দখলে থাকিবে। আমার জানার বিষয় হল,

১. মালিকের প্রতি সুধারণার ভিত্তিতে তার অনুমতি ছাড়া ঐ জায়গায় মসজিদ বানানো কি ঠিক হয়েছে? মালিকের অনুমতি নিয়ে যেহেতু মসজিদটি নির্মাণ করা হয়নি তাই ওয়াকফ করে দেয়ার পর কি তা শরয়ী মসজিদ হবে?

৩.ওয়াকফ দলীলের ঐ শর্ত কি ঠিক আছে? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর                                                                                       

بسم الله الرحمن الرحيم

حامدا و مصليا و مسلما

১. জায়গার মালিকের অনুমতি ছাড়া মসজিদ বানানো জায়েয হয়নি। মসজিদ বানানোর আগে মালিকের অনুমতি নেওয়া জরুরি ছিল। অবশ্য পরবর্তীতে মালিকের অনুমোদনের কারণে এবং জায়গাটিকে মসজিদের জন্য ওয়াকফ করে দেওয়ার কারণে তা শরয়ী মসজিদ হয়ে গেছে। তা ভেঙ্গে পুননির্মাণ করা লাগবে না।

২. ওয়াকফ দলীলের এ শর্তটি- “ওয়াকফকৃত ভূমি আমার নিজ দখলে থাকিবে” ঠিক নয়। বরং তা বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। কেননা শরীয়ার ওয়াকফ-নীতি হল, কোনো জমি ওয়াকফ করা হলে ঐ জমি ওয়াকফকারীর মালিকানা এবং দখল থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়ে যায়। তবে দখল দ্বারা কর্তৃত্ব বুঝিয়ে থাকলে তা সহিহ গণ্য হবে। সেক্ষেত্রে মসজিদের স্বার্থ ও কল্যাণে সার্বিক দেখাশুনার দায়িত্ব তার উপর থাকবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১২৭; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৫৫; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৪৮

আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।

و الله تعالى أعلم بالصواب

وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم

উত্তর দিচ্ছেন: ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী

বিষয়সমূহ