কোনো ওয়াক্তের কাযা নামায স্মরণ থাকা সত্ত্বেও পরের ওয়াক্ত পড়লে কি উক্ত নামায সহিহ হবে?

প্রশ্ন                                                                                         

আমি গতকাল গাড়িতে থাকায় আসরের নামায যথাসময়ে আদায় করতে পারি নি। পরে মাগরিবের সময় গাড়ি থেকে নেমে এক মসজিদে জামাতের সাথে মাগরিবের নামায পড়ি। তখন আমার আসরের নামাযের কথা স্মরণ ছিল। কিন্তু মাগরিবের জামাত দাঁড়িয়ে যাওয়ায় আসরের কথা স্মরণ থাকা সত্ত্বেও মাগরিবের জামাতে শরিক হয়ে যাই। আর আমার পূর্বের কোনো নামায কাযা নেই। এখন আমার করণীয় কী?  আমি কি আসরের কাযা আদায় করে নিব? বিস্তারিত জানতে চাই।

উত্তর                                                                                       

بسم الله الرحمن الرحيم

حامدا و مصليا و مسلما

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আসরের কাযা নামাযের কথা স্মরণ থাকা সত্ত্বেও আপনার মাগরিবের জামাতে শরিক হওয়া এবং তা পড়া সহিহ হয়নি। তাই এখন আপনার করণীয় হল, আসরের কাযা নামাযটি পড়ে উক্ত মাগরিবের নামায পুনরায় পড়ে নেওয়া। কেননা যার পেছনের কোনো নামায কাযা নেই তার যদি কোনো ওয়াক্ত নামায কাযা হয়ে যায় তবে তার জন্য পরবর্তী ওয়াক্তের নামায পড়ার আগে ঐ কাযা নামায আদায় করা জরুরি। কাযা আদায় করতে গিয়ে জামাত ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হলেও তাকে আগে কাযাই আদায় করতে হবে। কিন্তু সময় স্বল্পতার দরুণ কাযা আদায় করতে গিয়ে যদি পরবর্তী ওয়াক্তের ফরয ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তখন ওয়াক্তের নামায আগে পড়ে নিতে হবে।

হাদিস শরিফে আছে, আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন,

مَنْ نَسِيَ صَلَاةً فَذَكَرَهَا مَعَ الْإِمَامِ فَلْيُصَلِّهِ مَعَهُ ثُمَّ لِيُصَلِّ الَّتِي نَسِيَ  ثُمَّ لِيُصَلِّ الْأُخْرَى بَعْدَ ذَلِكَ.

যে ব্যক্তি কোনো ওয়াক্তের নামায (ওয়াক্তের ভেতর) পড়তে ভুলে গেছে অতপর ইমামের পেছনে (পরবর্তী ওয়াক্তের) নামায পড়ার সময় তার ঐ নামাযের কথা স্মরণ হয় সে যেন ইমামের সাথে নামাযটি পড়ে নেয়। এরপর যে নামাযটি পড়তে ভুলে গিয়েছিল তা আদায় করে। অতপর ইমামের সাথে যে নামাযটি পড়েছে তা আবার পড়ে নেয়। (শরহু মাআনিল আসার, তহাবী, হাদিস: ২৬৮৪; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ২২৫৪)

এ হাদীসটি বর্ণনা করার পর ইমাম তহাবী (রাহ.) বলেন, ইমামের সাথে যে নামাযটি পড়েছে তা আমাদের নিকট নফল হিসেবে গণ্য হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৪৭-৩৫০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২২; আল বাহরুর রায়েক ২/৮০

আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।

و الله تعالى أعلم بالصواب

وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم

উত্তর দিচ্ছেন: ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী