যাকাত সংক্রান্ত একটি মাসআলা।
প্রশ্ন
আমার বন্ধুর ছোট একটি দোকান আছে। দোকানে সবসময় ৭/৮ হাজার টাকার ব্যবসার মাল থাকে। তো সে কুরবানীর ঈদের পর নেসাবের মালিক হয়। ৬ মাস পর সে উক্ত টাকা দিয়ে বাড়ি বানানোর জন্য জমি ক্রয় করে। এতে তার সব টাকা খরচ হয়ে যায় এবং আরো ঋণ করতে হয়। এখনো সে পরিপূর্ণভাবে ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। এ অবস্থায় জানার বিষয় হল-
১. নগদ টাকা খরচ হয়ে যাওয়ার কারণে ঐ ব্যক্তির নেসাব বাকি আছে কি?
২. নেসাব বাকি থাকলে কি যাকাতবর্ষ শেষে অন্যান্য যাকাতযোগ্য সম্পদের সাথে ঋণ পরিশোধের জন্য জমাকৃত টাকারও যাকাত, কুরবানী আদায় করতে হবে? এবং কুরবানীর দিনগুলোতে ব্যবসার মাল ছাড়া নগদ অর্থ কুরবানীর সর্বাপেক্ষা ছোট পশুর মূল্যের পরিমাণ না হলে কি ধার করে কুরবানী করতে হবে?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
১. যাকাতবর্ষ পূর্ণ হওয়ার সময় ঐ ব্যক্তির মালিকানায় যেহেতু নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকছে না তাই তার উপর এ বছরের যাকাত ফরয হবে না। কেননা প্রশ্নের বর্ণনামতে দোকানের মাত্র ৭/৮ হাজার টকার পণ্য ব্যতীত তার যাকাতযোগ্য সকল সম্পদ খরচ হয়ে গেছে। পাশাপাশি তার উপর প্রচুর ঋণও রয়েছে। এমনকি এক্ষেত্রে তার উপর কুরবানী ও সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে না। আর নেসাবের মালিক হওয়ার পর যাকাতবর্ষ পূর্ণ হওয়ার আগেই যদি ঋণ হয়ে যায় এবং এ ঋণ বাদ দিলে বছর শেষে যাকাতের নেসাব না থাকে তাহলে তার উপর যাকাত ফরয হবে না।
২. কারো উপর ঋণ থাকলে যাকাত-বর্ষ শেষে ঐ ঋণ বাদ দিয়ে অবশিষ্ট সম্পদ নেসাব পরিমাণ হলে এর যাকাত আদায় করা ফরয। ঋণের টাকার উপর যাকাত আসে না। অনুরূপ ঋণের টাকা বাদ দেওয়ার পর যদি কুরবানীর নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে তাহলে তার উপর কুরবানীও ওয়াজিব। আর যার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়েছে তার নিকট কুরবানী করার মতো পর্যাপ্ত নগদ অর্থ না থাকলেও কুরবানী করা আবশ্যক। এক্ষেত্রে প্রয়োজন-অতিরিক্ত কোনো জিনিস, জমি ইত্যাদি বিক্রি করে অথবা ঋণ করে হলেও কুরবানী করতে হবে।
-মুআত্তা মুহাম্মাদ, হাদিস: ৩২২; আলমাবসূত, সারাখসী ৩/১০৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯৯; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৬/২৮৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৫৮-৩৬০
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন: ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী