বাড়ি বানানোর জন্য টাকা সঞ্চয় করলে উক্ত টাকায় কি হজ্ব ফরয হবে?
প্রশ্ন
আমার বসবার উপযুক্ত কোনো বাড়ি নেই। তাই আমি বাড়ি বানানোর জন্য কিছু টাকা সঞ্চয় করেছি। আমি যে পরিমাণ টাকা সঞ্চয় করেছি তা দিয়ে আমার উপর হজ্ব ফরয হয়ে যায়। কিন্তু এই টাকা দিয়ে হজ্ব করলে আমি আর বাড়ি বানাতে পারব না। আমি জানি যে, বাড়ি হল, হাজতে আসলিয়া অর্থাৎ মৌলিক প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত। তাই এ অবস্থায় আমার উপর কি হজ্ব ফরয হবে? ফরয হলে হাজতে আসলিয়ার অর্থ কী? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
নিজে ও পরিবার-পরিজনের বসবাসের ব্যবস্থা থাকা হাজতে আসলিয়া অর্থাৎ ব্যক্তির মৌলিক প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত। এই প্রয়োজন ভাড়া বাসার দ্বারাও পূর্ণ হতে পারে। নিজের মালিকানাধীন হওয়া জরুরি নয়।
সুতরাং যার জন্য ভাড়া বাড়িতে থাকার সুব্যবস্থা আছে তার জন্য নিজস্ব বাড়ি বানানো মৌলিক প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা ভাড়া বাসা দ্বারা তো তার বসবাসের প্রয়োজন পূর্ণ হয়েই যাচ্ছে।
অতএব এমন ব্যক্তি যদি বাড়ি বানানোর নিয়তে টাকা জমা করে যা দিয়ে তার হজ্বের খরচ হয়ে যাবে তাহলে নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী এ টাকার কারণে তার উপর হজ্ব ফরয হয়ে যাবে। তাই হজ্বের মৌসুমে এ টাকা দিয়ে হজ্ব করা তার জন্য আবশ্যক হয়ে যাবে। তবে হজ্বের মৌসুম আসার আগেই যদি ঐ টাকা বাড়ি বানানো বা অন্য কোনো প্রয়োজনে খরচ করে ফেলে এবং তার কাছে হজ্ব করার মতো আর টাকা না থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে তার উপর হজ্ব ফরয হবে না।
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তির বসবাসের জন্য ভাড়া বাসারও ব্যবস্থা নেই এবং বসবাসের প্রয়োজন পূরণের জন্যই তাকে বাড়ি বানাতে হবে তার জন্য নিজস্ব বাড়ি মৌলিক প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত। এমন ব্যক্তি যদি বাড়ি বানানোর জন্য টাকা জমা করে এবং হজ্বের মৌসুম আসার পর তার কাছে এ পরিমাণ টাকা থাকে, যা দিয়ে হজ্ব করলে বাড়ি বানানো যাবে না তাহলে তার উপর ঐ টাকার কারণে হজ্ব ফরয হবে না।
-আলবাহরুল আমীক ১/৩৮২; মানাসিক ৪৪; গুনইয়াতুন নাসিক ২০; মিনহাতুল খালিক ২/৩১৩
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন: ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী