নারীদের জন্য মাহরাম ছাড়া হজ্বে যাওয়ার বিধান কী?

প্রশ্ন                                                                                         

আমি ছোট থেকেই আমেরিকায় বড় হয়েছি। বিয়ের পরেও স্বামী-সন্তানসহ প্রায় সারা জীবনই কাটিয়েছি আমেরিকায়। আল্লাহর রহমতে আমি দ্বীনের পথে ফিরে আসি। কিন্তু আমার স্বামী তা মেনে নেয় না। তাই এক পর্যায়ে আমাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। বর্তমানে আমি বাংলাদেশে আছি। এখানে শুধু আমার মা ও ছোট বোনেরা থাকে। আল্লাহ আমাকে অনেক সম্পদ দান করেছেন। এখন আমি হজ্ব করতে চাচ্ছি। কিন্তু আমার সঙ্গে কোনো মাহরাম নেই। আমি কি একাকী হজ্ব করতে পারব?

উত্তর                                                                                       

بسم الله الرحمن الرحيم

حامدا و مصليا و مسلما

মহিলাদের জন্য মাহরাম ব্যতীত হজ্বের সফরে যাওয়া নিষেধ। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন,

لاَ يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ، وَلاَ تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ، فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، اكْتُتِبْتُ فِي غَزْوَةِ كَذَاوَكَذَا، وَخَرَجَتِ امْرَأَتِي حَاجَّةً، قَالَ: اذْهَبْ فَحُجَّ مَعَ امْرَأَتِكَ.

কোনো পুরুষ যেন কোনো মহিলার সাথে নির্জনে অবস্থান না করে এবং কোনো মহিলা যেন মাহরাম ব্যতীত সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি অমুক যুদ্ধে নাম লিখিয়েছি আর আমার স্ত্রী হজ্বের জন্য বের হচ্ছে। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, যাও। তুমিও তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্ব কর। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩০০৬)

আরেক হাদিসে এসেছে, নবী কারীম (সা.)বলেন,

لَا تَحُجَّنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا ذُو مُحْرِمٍ

কখনো কোনো নারী মাহরাম ছাড়া হজ্ব করবে না। (সুনানে দারা কুতনী ২/২২২)

অতএব মাহরাম ছাড়া আপনার জন্য হজ্বে যাওয়া জায়েয হবে না। যতদিন শারীরিকভাবে নিজে হজ্ব করতে সক্ষম থাকেন ততদিন মাহরামের অপেক্ষা করবেন। অবশেষে মাহরাম না পেলে কারো দ্বারা বদলি হজ্ব করাতে হবে। আর এ ব্যাপারে পূর্ব থেকেই অসিয়ত করে রাখবেন। যেন হঠাৎ মৃত্যু হয়ে গেলে আত্মীয়-স্বজন আপনার সম্পদ দ্বারা বদলি হজ্ব করিয়ে নেয়।

উল্লেখ্য যে, বোনের ছেলে এবং আপন মামা মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। আপনার এমন কোনো উপযুক্ত আত্মীয় থাকলে তাদের কাউকে সাথে নিয়ে হজ্বে যেতে পারবেন।

-ফাতহুল কাদীর ২/৩২৭, ৩/৬৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৯; আলবাহরুর রায়েক ৩/৬১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩০৮; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী পৃ. ৫৭

আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।

و الله تعالى أعلم بالصواب

وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم

উত্তর দিচ্ছেন: ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী