সন্তান লালন-পালন সংক্রান্ত একটি মাসআলা।

প্রশ্ন                                                                                         

আমার এক বন্ধু এক মেয়েকে বিয়ে করে। সাত মাসের গর্ভবতী অবস্থায় মেয়েটি পালিয়ে গিয়ে আরেক ছেলের সাথে সংসার শুরু করে। এর এক মাস পর প্রথম স্বামী ঐ মেয়েকে তালাক প্রদান করে। পালিয়ে যাওয়ার তিন মাস পর একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। পরবর্তীতে মেয়েটি কাযী অফিসে গিয়ে ঐ ছেলেটিকে বিয়ে করে নেয়। সন্তানের লালন-পালন ঐ মেয়ে এবং তার দ্বিতীয় স্বামীই করে যাচ্ছে। প্রথম স্বামীকে লালন-পালন করা এমনকি দেখার সুযোগ দিতেও তারা রাজি না। এখন আমি জানতে চাই-

১. ঐ কন্যা সন্তানের পিতা হিসেবে পরিচয় কে পাবে?

২. সন্তানটির লালন-পালনের অধিকার কে রাখে?

৩. এমন অপারগতাবস্থায় সন্তানের খোঁজ-খবর না নেওয়ার দ্বারা প্রথম স্বামী গুনাহগার হবে কি না?

৪. ঐ সন্তানের লালন-পালনের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্বামীর কোনো অধিকার আছে কি না?

উত্তর                                                                                       

بسم الله الرحمن الرحيم

حامدا و مصليا و مسلما

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রথম স্বামীই ঐ শিশু মেয়েটির পিতা। তাই ঐ মেয়ের পিতা হিসাবে তার পরিচয়ই দিতে হবে।

-তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/২৭৬; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৩৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৩৭; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৫৭

২. সাধারণ অবস্থায় সন্তান লালন-পালনের প্রথম হকদার সন্তানের মা। তবে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সন্তানের মাহরাম নন এমন ব্যক্তির সাথে মার বিবাহ হওয়ায় তার এ সন্তান লালন-পালনের অধিকার নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমান অবস্থায় শিশুটির নানী তার লালন-পালনের অধিকার পাবে, যদি তার বাড়ির পরিবেশ দ্বীন-শরীয়তের অনুকূলে থাকে।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২২৭৬; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪৫৬-৭; কিতাবুল আছল ১০/৩৫১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২৭৩

৩. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পিতা যেহেতু চেষ্টা করা সত্ত্বেও সন্তানের খোঁজ-খবর নিতে পারছেন না তাই আশা করা যায়, এক্ষেত্রে তিনি গুনাহগার হবেন না।

৪. না, লালন-পালনের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্বামীর কোন অধিকার নেই।

উল্লেখ্য, প্রথম স্বামী তালাক দেওয়ার পর সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া দ্বারাই তার ইদ্দত শেষ হয়ে গেছে। এরপর ঐ ছেলেটির সাথে তার বিবাহ সহিহ হয়েছে। তবে এর আগ পর্যন্ত ঐ ছেলেটির সাথে একত্রে থাকা হারাম হয়েছে। এজন্য তাদেরকে আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা-ইস্তেগফার করতে হবে।

আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।

و الله تعالى أعلم بالصواب

وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم

উত্তর দিচ্ছেন: ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী সূত্র:https://www.drkhalilurrahman.com/?p=28716&preview=true