এক মাসের ভ্রুন নষ্ট করলে কি গুনাহ হবে?

প্রশ্ন                                                                                         

আমার বাচ্চার বয়স পাঁচ মাস। এমতাবস্থায় জানতে পারি আমার স্ত্রী এক মাসের গর্ভবতী। আর সে শারীরিক ভাবে খুব দূর্বল। এই মুহুর্তে আরেকটা বাচ্চা ধারণ করা তার পক্ষে সম্ভব না। এই পরিস্থিতিতে কি ভ্রুন নষ্ট করা যাবে?

উত্তর                                                                                       

بسم الله الرحمن الرحيم

حامدا و مصليا و مسلما

গর্ভস্থ সন্তানের কারণে যদি গর্ভবতী মায়ের জীবন হুমকির মুখে পড়ে, বিষয়টি যদি নিরপেক্ষ ও অভিজ্ঞ ডাক্তারের মাধ্যমে নির্দেশিত হয়, তাহলে গর্ভস্থ সন্তানের বয়স চার মাস হওয়ার আগে গর্ভপাত বৈধ হয়। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হয় না।   কেননা, হাদিসের ভাষ্য থেকে জানা যায়, গর্ভস্থ সন্তানের বয়স চার মাস পূর্ণ হলে তার দেহে রূহ বা আত্মা ফুঁকে দেওয়া হয়। আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

إِنَّ أَحَدَكُمْ يُجْمَعُ خَلْقُهُ فِيْ بَطْنِ أُمِّهِ أَرْبَعِيْنَ يَوْمَاً نُطْفَةً، ثُمَّ يَكُوْنُ عَلَقَةً مِثْلَ ذَلِكَ،ثُمَّ يَكُوْنُ مُضْغَةً مِثْلَ ذَلِكَ،ثُمَّ يُرْسَلُ إِلَيْهِ المَلَكُ فَيَنفُخُ فِيْهِ الرٌّوْحَ،وَيَؤْمَرُ بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ: بِكَتْبِ رِزْقِهِ وَأَجَلِهِ وَعَمَلِهِ وَشَقِيٌّ أَوْ سَعِيْدٌ

‘তোমাদের সকলের সৃষ্টি নিজের মায়ের পেটে চল্লিশ দিন যাবৎ শুক্ররূপে জমা হওয়ার মাধ্যমে শুরু হতে থাকে, পরবর্তী চল্লিশ দিন জমাট বাঁধা রক্তরূপে থাকে, পরবর্তী চল্লিশ দিন গোশতপিণ্ড রূপে থাকে, তারপর তার কাছে ফিরিশ্‌তা পাঠানো হয়। অতঃপর সে তার মধ্যে রূহ প্রবেশ করায় এবং তাকে চারটি বিষয় লিখে দেয়ার জন্য হুকুম দেয়া হয়- তার রুজি, বয়স, কাজ এবং সে কি সৌভাগ্যবান না দুর্ভাগ্যবান।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩২০৮)   আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, উম্মতে মুসলিমার সকল ফুকাহা এ ব্যাপারে একমত, রূহ আসার পর গর্ভপাত করা সম্পূর্ণ নাজায়েজ ও হারাম। কারণ এটা الوأد (সূক্ষ সমাহিত) এর অন্তর্ভুক্ত; যে ব্যপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, وَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ – بِأَيِّ ذَنْبٍ قُتِلَتْ ‘যখন (কেয়ামতের দিন) জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কোন অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে…….।’ (সূরা তাকবীর, আয়াত: ৮-৯) -ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ৪/২১৭

আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।

و الله تعالى أعلم بالصواب

وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم

উত্তর দিচ্ছেন: ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী সূত্র:https://www.drkhalilurrahman.com/26687/article-details.html