মানুষকে বোকা বানানোর ভিডিও করা যাবে কি

প্রশ্ন                                                                                                  

বর্তমানে মানুষকে বোকা বানিয়ে ভিডিও বানানোর ট্রেন্ড চালু হয়েছে। জানতে চাচ্ছি, এগুলো কি বৈধ?

উত্তর                                                                                                

بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما

বর্তমানে মানুষকে বোকা বানিয়ে ভিডিও করার এক অসুস্থ রীতির উদ্ভব হয়েছে। যার পুরোটাই শরিয়ত বিরোধী বিষয়ে ভরপুর। নিম্নে তার কিছু খারাবি দেওয়া হল,

১. মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া হয়। যা সুস্পষ্টভাবে হারাম। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন,

‘সেই লোক ধ্বংস হোক যে মানুষদের হাসানোর উদ্দেশ্যে কথা বলতে গিয়ে মিথ্যা বলে। সে নিপাত যাক, সে নিপাত যাক।’ [সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ২৩১৫]

২. ধোঁকার আশ্রয় নেওয়া হয়। আর ধোঁকা শরিয়তের দৃষ্টিতে হারাম। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন,

‘যে ধোঁকা দেয় সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৫]

৩. মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়, তাকে কষ্ট দেওয়া হয়, তার ইজ্জত আব্রু নষ্ট করা হয়। এগুলোও শরিয়তের দৃষ্টিতে হারাম। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন,

‘এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। সে তার উপর অত্যাচার করবে না, তাকে অপদস্ত করবে না এবং হেয় প্রতিপন্ন করবে না। তাকওয়া এখানে, এ কথা বলে রাসূল (সা.) তিনবার তাঁর বক্ষের প্রতি ইঙ্গিত করলেন। একজন মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে তার ভাইকে হেয় জ্ঞান করে। কোনো মুসলিমের উপর প্রত্যেক মুসলিমের জান-মাল ও ইজ্জত-আব্রু হারাম।’ [সহিহ মুসলি, হাদিস: ৬৪৩৫]

৪. পর্দা একটি ফরজ বিধান। সর্বাবস্থায় তা পালনীয়। অথচ উক্ত ভিডিওগুলোতে পর্দার বিধান লঙ্ঘিত হয় পুরোপুরি। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,

‘হে নবী, তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের নারীদেরকে বল, তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দেয়, তাদেরকে চেনার ব্যাপারে এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা হবে। ফলে তাদেরকে কষ্ট দেয়া হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ [সূরা আহযাব, আয়াত: ৫৯]

৫.ছবি/ভিডিও তৈরি হারাম। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ছবি তৈরির ব্যাপারে ইরশাদ করেছেন,

‘যে ব্যক্তি কোনো ছবি তৈরী করে আল্লাহ তাআলা তাকে শাস্তি দিবেন, যতক্ষণ না সে তাতে প্রাণ সঞ্চার করে। আর সে তাতে কখনো প্রাণ সঞ্চার করতে পারবে না।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ২২২৫]

অথচ পুরো ঘটনাটি ভিডিও করা হয়।

৬. মিউজিকের ব্যাপারে হাদিস শরিফে এসেছে,

‘দফ হারাম। বাদ্যযন্ত্র হারাম। মদের পেয়ালা হারাম। বাঁশী হারাম।’ [সুনানে সুগরা লিলবায়হাকী, হাদিস: ৩৩৫৯]

অথচ ভিডিওটি করার সময় বিভিন্ন ধরনের মিউজিক তাতে যুক্ত করা হয়।

এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের শরিয়ত বিরোধী কর্মকান্ড যুক্ত থাকে বিধায় এ জাতীয় প্রাঙ্ক ভিডিও করা বৈধ হবে না।

আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।

و الله تعالى أعلم بالصواب

وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم

উত্তর দিচ্ছেন: ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/22586/article-details.html