মাহরাম কাকে বলে এবং কারা

প্রশ্ন                                                                                                         

আমি একজন নারীআমার জানার বিষয় হলো, মাহরাম কাকে বলে?  কারা কারা আমার মাহরামের অন্তর্ভুক্ত? মাহরামদের সাথে আমার সম্পর্ক কেমন হবে? বিস্তারিত জানতে চাই।

উত্তর                                                                                                       

بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما

মাহরাম হচ্ছে কুরআন এবং সুন্নাহের আলোকে নির্ধারিত কিছু ব্যক্তি। যাদের সাথে আপনি কোনোদিন বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবেন না। তবে তাদের সাথে আপনি দেখা দিতে পারবেন এবং তাদেরকে সাথে নিয়ে সফর করতে পারবেন। মাহরাম ব্যতীত অন্য সকল পুরুষদের সাথে দেখা করা অথবা তাদেরকে সাথে নিয়ে সফর করা মুসলিম নারীদের জন্য সম্পূর্ণ হারাম।     পবিত্র কুরআন মাজিদে ইরশাদ হচ্ছে, وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاءِ অর্থ: ‘আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।’  [সূরা নূর, আয়াত: ২৪]    ৩ ধরনের সম্পর্কের কারণে মাহরাম সাব্যস্ত হয়। ১। রক্তের সম্পর্কের কারণে। ২। দুধ পানের কারনে। ৩। বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে।    রক্তের সম্পর্কের কারনে যারা মাহরাম:   ক) পিতা, দাদা, দাদামহ অথবা নানা, নানামহ এভাবে যত উপর পর্যন্ত পাওয়া যাবে। খ) ছেলে, ছেলের ছেলে অথবা মেয়ের ছেলে এভাবে যত নীচ পর্যন্ত পাওয়া যাবে। গ) ভাই। সহোদর ভাই, বৈমাত্রেয় ভাই এবং বৈপিত্রেয় ভাই। ঘ) ভ্রাতৃপুত্রগণ। ছেলের দিক থেকে হোক কিংবা মেয়ের দিক থেকে। যেমন-বোনের মেয়েদের ছেলেরা, তাদের সন্তানদের ছেলেরা এভাবে যত নীচ পর্যন্ত পাওয়া যাবে। ঙ) চাচা ও মামা।   দুধ পানের কারণে যারা মাহরামঃ রক্তের সম্পর্কের কারণে যারা যারা মাহরাম হয় দুগ্ধ সম্পর্কীয় কারণে তারাই মাহরাম হয়। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, يَحْرُمُ من الرَضَاعِ ما يَحْرُمُ من النَّسَبِ অর্থ: ‘দুধের সম্পর্কের কারনে ঐ সমস্ত বিষয় হারাম হয় যা বংশীয় সম্পর্কের কারণে হারাম হয়।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৬৪৫]   বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে যারা মাহরাম: ক) স্বামীর পুত্রগণ, তাদের পুত্রের পুত্রগণ, কন্যার পুত্রগণ এভাবে যত নীচ পর্যন্ত পাওয়া যাবে। খ) স্বামীর পিতা, দাদা, নানা এভাবে যত উপর পর্যন্ত পাওয়া যাবে। গ) কন্যার স্বামী, পুত্র সন্তানের মেয়ের স্বামী, কন্যা সন্তানের মেয়ের স্বামী এভাবে যত নীচ পর্যন্ত পাওয়া যাবে। সূরা নূর ৩১, আহকামুল কুরআন ৩/৩১৭, সহিহ মুসলিম বি শারহিন নাবাবি ১০/২২,  শারহুল মুন্তাহা ৩/৭,  আল-মুগনী  ৬/৫৫৫

আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।

و الله تعالى أعلم بالصواب

وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم

 

উত্তর দিচ্ছেন:

. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী

সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/1354/article-details.html