প্রশ্ন
বর্তমান মিডিয়াগুলো ইসলামের উপর কালিমা লেপনে সর্বদা সচেষ্ট থাকে। কিন্তু আমরা তাদের জবাবে তেমন কিছুই করছি না। এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী হতে পারে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
বর্তমানে দুনিয়ার মানুষ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। ইসলামপন্থী আর সেক্যুলারপন্থী। সেক্যুলারপন্থীদের মাঝে ভিন্ন ধর্মের লোকেরাও অন্তর্ভুক্ত। মিডিয়াগুলো সাধারণত নিয়ন্ত্রণ করে সেক্যুলারপন্থী ব্যক্তিবর্গ। সেক্ষেত্রে আমরা হলাম দর্শক, বক্তা বা শিল্পী। আমরা যতই চিন্তা করি না কেন, তাদের মোকাবেলা করার ক্ষমতা আমাদের নেই। তাদের মোকাবেলা করতে হলে রাষ্ট্রীয় শক্তি বা আর্থিক শক্তির প্রয়োজন। তাদের পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য মিডিয়া তৈরি করা আমাদের মুসলিম রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
আসলে ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলা বর্তমান সেক্যুলারধর্মী মিডিয়াগুলোর একটি মিশন। ইসলামের সৌন্দর্য যেন মানুষের সামনে প্রকাশিত না হতে পারে, এ জন্য তারা সর্বদা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এই ষড়যন্ত্র বর্তমান সময়ে যে সৃষ্টি হয়েছে- বিষয়টি কিন্তু এমন নয়। বরং রাসূল (সা.)-এর যুগেও তারা এ জাতীয় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। ইসলাম প্রচারে তারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করত। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لَا تَسْمَعُوا لِهَٰذَا الْقُرْآنِ وَالْغَوْا فِيهِ لَعَلَّكُمْ تَغْلِبُونَ
‘আর কাফিররা বলে, তোমরা এ কুরআনের নির্দেশ শুন না এবং এর আবৃত্তি কালে শোরগোল সৃষ্টি কর, যেন তোমরা জয়ী হতে পার।’ [সূরা হা মীম আস সাজদা, আয়াত: ২৬]
সেই যুগে আল্লাহ তাআলা সাহাবীগণকে সতর্ক করে বলেছিলেন যে, এমন কোনো শব্দ বা পরিভাষা ব্যবহার করা যাবে না যাতে শত্রুরা খুঁত বের করতে পারে। ইতিহাসে পাওয়া যায়, সাহাবায়ে কেরাম রাসূল (সা.)-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ‘রা‘ইনা’ শব্দ ব্যবহার করতেন। এই শব্দের একটি অর্থ হল আমাদেরকে রক্ষণাবেক্ষণ করেন। এর আরেকটি অর্থ রয়েছে। তা হল, আমাদেরকে চরান বা আমাদের রাখাল। বিধর্মীরা এই শব্দটি নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা শুরু করে দেয় যে, দেখ মুহাম্মাদ হল রাখাল। তখন আল্লাহ তাআলা বলে দেন, এই শব্দ ব্যবহার না করে তোমরা বলবে, ‘উনযুরনা’। অর্থাৎ, আমাদের দিকে দৃষ্টি দিন। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَقُولُوا رَاعِنَا وَقُولُوا انظُرْنَا وَاسْمَعُوا ۗ وَلِلْكَافِرِينَ عَذَابٌ أَلِيمٌ
‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা ‘রা‘ইনা’ বলে সম্বোধন করো না, (যার অর্থ আমাদের রাখাল) বরং তোমরা বলবে ‘উনযুরনা’ (অর্থাৎ আমাদের প্রতি নেকদৃষ্টি দিবেন!) এবং শুনে নাও, বস্তুত অবিশ্বাসীদের জন্যই রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি।’ [সূরা বাকারা, আয়াত: ১০৪]
কাজেই আমাদেরকেও কথা বলার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেন বিধর্মীরা আমাদের কোনো কথা থেকে ভুল ব্যাখ্যা করার সুযোগ না পায়।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/8423/article-details.html