প্রশ্ন
কিছুদিন আগে আমি একটি বইয়ে পেলাম যে, সালাতুল মালাইকা নামে একটি দোয়া রয়েছে, যা পাঠ করলে দুনিয়া ব্যক্তির অধীন হয়ে যাবে। তার প্রতিটি শব্দের পরিবর্তে আল্লাহ তাআলা একজন করে ফেরেশতা নিযুক্ত করে দিবেন, যে কেয়ামত পর্যন্ত তাসবীহ পাঠ করতে থাকবে। এর সওয়াব উক্ত ব্যক্তি লাভ করবে। উক্ত দোয়াটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছি। সেই দোয়ার উপর আমল করতে কোনো সমস্যা আছে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
প্রশ্নোক্ত দোয়াটি ছিলাহুল মুমিন নামক একটি গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত বর্ণনাটি নিম্নে উল্লেখ করা হল:
جاء رجلٌ إلى رسولِ اللهِ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم فشكَا إليه فقرًا أو ديْنًا فقال له رسولُ اللهِ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم : فأين أنت من صلاةِ الملائكةِ ، وتسبيحِ الخلائقِ ، وبها يُنزِلُ اللهُ الرِّزقَ من السَّماءِ ؟ قال ابنُ عمرَ : فقلتُ : وما ذاك يا رسولَ اللهِ ؟ قال : فاستوَى رسولُ اللهِ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم قاعدًا ، وكان مُتَّكِئًا ، فقال : يا بنَ عمرَ تقولُ من طلوعِ الفجرِ إلى صلاةِ الصُّبحِ : سبحانَ اللهِ وبحمدِه سبحانَ اللهِ العظيمِ ، وأستغفِرُ اللهَ مائةَ مرَّةٍ ، تأْتِك الدُّنيا راغمةً ذاخرةً ، ويخلقُ اللهُ عزَّ وجلَّ من كلِّ كلمةٍ تقولُها ملَكًا يُسبِّحُ ، لك ثوابُه إلى يومِ القيامةِ
‘এক ব্যক্তি রাসূল (সা.)-এর কাছে এসে দারিদ্র্য ও অসহায়তার অভিযোগ করল। রাসূল (সা.) বললেন, তুমি সালাতুল মালাইকা ও সৃষ্টিকুলের তাসবীহ থেকে কোথায় রয়েছ, যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আসমান থেকে রিযিক নাযিল করেন? বর্ণনাকারী ইবনে উমর (রা.) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, সেটা কী? বর্ণনাকারী বলেন, রাসূল (সা.) হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন, হে ইবনে উমর, সুবহে সাদিক থেকে ফজরের নামাজ পর্যন্ত তুমি একশতবার পাঠ করবে, সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম, আস্তাগফিরুল্লাহ। এই দোয়া পাঠ করলে দুনিয়া তোমার কাছে লাঞ্ছিত ও অপমানিত অবস্থায় উপস্থিত হবে। প্রতিটি শব্দের পরিবর্তে আল্লাহ তাআলা একজন করে ফেরেশতা নিযুক্ত করে দিবেন, যে তাসবীহ পাঠ করতে থাকবে। সে কেয়ামত পর্যন্ত তার সওয়াব লাভ করতে থাকবে।’ [ছিলাহুল মুমিন পৃ. ৬১-৬১]
ইবনে হিব্বান (রহ.), ইবনে যাওজী (রহ.), ইবনে আদী (রহ.)-সহ মুহাদ্দিসগণ উক্ত বর্ণনাকে জাল ও বানোয়াট বলেছেন। [আল মাজরূহীন ১/১৪৮; মাউযুআতে ইবনে যাওজী ৩/৪১৮; আল কামিল ফিজযুআফা ১/৫৫৮]
তাই এ ধরনের নামাজের পিছনে পড়ার কোন প্রয়োজন নেই।
কাজেই উক্ত পদ্ধতিতে আমল করার কোনো সুযোগ নেই। তবে সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম- এর অনেক ফজিলতের কথা বিভিন্ন সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। সেগুলোর উপর আমল করতে সচেষ্ট থাকা উচিত।
সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৪০৫
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/8343/article-details.html