প্রশ্ন
আমি কাতারে থাকি। আমার গ্রামের বাড়িতে একটি মাদরাসা রয়েছে। আমি প্রতি মাসে কাতার থেকে সেই মাদরাসার ফান্ডে টাকা পাঠিয়ে থাকি। কিন্তু মাদরাসার নামে টাকা পাঠাতে গেলে কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। তারা মনে করে আমি জঙ্গী কর্মকাণ্ডে সহায়তার জন্য টাকা পাঠাচ্ছি। আমার প্রশ্ন হল, আমি যদি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মাদরাসার ফান্ডে টাকা পাঠাই, উদাহরণস্বরূপ, আমি বললাম, আমার পরিবারের কাছে টাকা পাঠাচ্ছি- তাহলে তা বৈধ হবে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
শরিয়তের দৃষ্টিতে মিথ্যা বলা হারাম। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْأَوْثَانِ وَاجْتَنِبُوا قَوْلَ الزُّورِ
‘তোমরা মুর্তিপূজার নোংরামী থেকে বাঁচো এবং মিথ্যা কথা থেকে বাঁচো।’[সূরা হজ, আয়াত: ৩০]
হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ آيَةُ الْمُنَافِقِ ثَلاَثٌ إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ، وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ
‘আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি:
১. যখন কথা বলে মিথ্যা বলে।
২. যখন অঙ্গীকার করে ভঙ্গ করে।
৩. আমানত রাখা হলে খেয়ানত করে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৩; সহিহ মুসলিম, হাদিস:৫৯]
কাজেই মাদরাসার ফান্ডে টাকা পাঠানোর জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে আপনি কৌশলের আশ্যয় নিতে পারেন। তা এভাবে যে, আপনি আসলেই আপনার পরিবারের কোনো সদস্যের নামে টাকা পাঠাতে পারেন। তাকে বলে দিবেন মাদরাসায় দান করে দেওয়ার জন্য। অথবা মাদরাসার মুহতামিম সাহেবের নামে টাকা পাঠাবেন। তার পরিচয় দিবেন আপনার ভাই হিসেবে। কারণ, সকল মুসলমান পরস্পরের ভাই। সুতরাং মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে হয়রানির শিকার হওয়া ছাড়াই আপনি মাদরাসার ফান্ডে টাকা পাঠাতে পারেন।
রদ্দুল মুহতার ৬/৪২৭
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/8054/article-details.html