প্রশ্ন
আমি শুনেছি রাসূল (সা.) তাঁর মৃত্যুর আগে সাহাবায়ে কেরামকে তিনটি নসীহত করে গিয়েছিলেন। আমি জানতে চাচ্ছি, সেই তিনটি নসীহত কী ছিল?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
রাসূল (সা.) তাঁর মৃত্যুর আগে সাহাবায়ে কেরামকে তিনটি নসীহত করেছিলেন। অধিকাংশ হাদিসের কিতাবে ঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে। এটিকে হাদিসে কিরতাসও বলা হয়। হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ قَالَ يَوْمُ الْخَمِيْسِ وَمَا يَوْمُ الْخَمِيْسِ ثُمَّ بَكَى حَتَّى خَضَبَ دَمْعُهُ الْحَصْبَاءَ فَقَالَ اشْتَدَّ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَجَعُهُ يَوْمَ الْخَمِيْسِ فَقَالَ ائْتُوْنِيْ بِكِتَابٍ أَكْتُبْ لَكُمْ كِتَابًا لَنْ تَضِلُّوْا بَعْدَهُ أَبَدًا فَتَنَازَعُوْا وَلَا يَنْبَغِيْ عِنْدَ نَبِيٍّ تَنَازُعٌ فَقَالُوْا هَجَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ دَعُونِيْ فَالَّذِيْ أَنَا فِيْهِ خَيْرٌ مِمَّا تَدْعُونِيْ إِلَيْهِ وَأَوْصَى عِنْدَ مَوْتِهِ بِثَلَاثٍ أَخْرِجُوْا الْمُشْرِكِيْنَ مِنْ جَزِيْرَةِ الْعَرَبِ وَأَجِيْزُوْا الْوَفْدَ بِنَحْوِ مَا كُنْتُ أُجِيْزُهُمْ وَنَسِيْتُ الثَّالِثَةَ
‘ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বললেন, বৃহস্পতিবার! হায় বৃহস্পতিবার! অতঃপর তিনি কাঁদতে শুরু করলেন, এমনকি তাঁর অশ্রুতে কঙ্করগুলো সিক্ত হয়ে গেল। আর তিনি বলতে লাগলেন, বৃহস্পতিবারে আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর রোগ যাতনা বেড়ে যায়। তখন তিনি বললেন, তোমরা আমার জন্য লিখার কোন জিনিস নিয়ে এসো, আমি তোমাদের জন্য কিছু লিখিয়ে দিব। যাতে অতঃপর তোমরা কখনও পথভ্রষ্ট না হও। এতে সাহাবীগণ পরস্পরে মতভেদ করেন। অথচ নবীর সম্মুখে মতভেদ সমীচীন নয়। তাদের কেউ কেউ বললেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) দুনিয়া ত্যাগ করছেন? তিনি বললেন, আচ্ছা, আমাকে আমার অবস্থায় থাকতে দাও। তোমরা আমাকে যে অবস্থার দিকে আহবান করছো তার চেয়ে আমি যে অবস্থায় আছি তা উত্তম। অবশেষে তিনি ইন্তিকালের সময় তিনটি বিষয়ে ওসীয়ত করেন। (১) মুশরিকদেরকে আরব উপদ্বীপ হতে বিতাড়িত কর, (২) প্রতিনিধি দলকে আমি যেরূপ উপঢৌকন দিয়েছি তোমরাও তেমন দিও (রাবী বলেন) তৃতীয় ওসীয়তটি আমি ভুলে গিয়েছি।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩০৫৩]
তৃতীয় নসীহতটির কথা রাবী ভুলে গিয়েছেন। মুহাদ্দিসগণ সেই তৃতীয় নসীহতটি নির্ধারণে মতভেদ করেছেন। ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) লিখেন,
‘তৃতীয় নসীহতটি ছিল, কুরআন মাজিদের উপর আমল করা। অথবা, উসামা (রা.)-এর বাহিনীকে রওনা করা। অথবা, রাসূল (সা.)-এর কবরস্থানকে সেজদার স্থান না বানানো। অথবা, নামাজের প্রতি গুরুত্বারোপ করা। অথবা, গোলামদের প্রতি যত্নবান হওয়া।’ [ফাতহুল বারী ৮/১৩০]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/7970/article-details.html