প্রশ্ন
আমি দেশের বাহিরে থাকি। আমাদের দেশে ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে দৈনিক ২০০০ ডলারের বেশি উত্তোলন করা যায় না। কখনো আমার ২০০০ ডলারের বেশি প্রয়োজন পড়লে আমার ভাইয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আমার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাঠিয়ে তার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করি। এর বিনিময়ে আমি তাকে পারিশ্রমিক হিসেবে কিছু দিয়ে থাকি। প্রশ্ন হল, এ ধরনের লেনদেন বৈধ কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন একটি বৈধ কাজ। আর বৈধ কাজের পারিশ্রমিক নির্ধারণ করতে শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা নেই। দু’জনের সম্মতিতে যে পারিশ্রমিক নির্ধারিত হবে, তা আপনি দিয়ে দিবেন। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ
‘মুসলিমরা নিজেদের (চুক্তিপত্রের) শর্তসমূহ পালন করতে বাধ্য।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩৫৯৪]
তবে আপনি তার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর আগেই সে যদি আপনাকে টাকা দিয়ে দেয় তাহলে সেক্ষেত্রে তার জন্য পারিশ্রমিক হিসেবে আপনার কাছ থেকে কোনো টাকা গ্রহণ করা বৈধ হবে না। কারণ সেক্ষেত্রে সেটা আর পারিশ্রমিক থাকে না, বরং সুদ হয়ে যায়। কেননা, অ্যাকাউন্টে আপনি টাকা পাঠানোর আগে সে আপনাকে যে টাকা দিয়েছে তা ঋণ হিসেবে গণ্য হয়েছে। আর ঋণ দিয়ে বেশি নেওয়াই সুদ। হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ سَعِيْدِ بْنِ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَتَيْتُ الْمَدِيْنَةَ فَلَقِيْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ سَلَامٍ فَقَالَ أَلَا تَجِيءُ فَأُطْعِمَكَ سَوِيْقًا وَتَمْرًا وَتَدْخُلَ فِيْ بَيْتٍ ثُمَّ قَالَ إِنَّكَ بِأَرْضٍ الرِّبَا بِهَا فَاشٍ إِذَا كَانَ لَكَ عَلَى رَجُلٍ حَقٌّ فَأَهْدَى إِلَيْكَ حِمْلَ تِبْنٍ أَوْ حِمْلَ شَعِيْرٍ أَوْ حِمْلَ قَتٍّ فَلَا تَأْخُذْهُ فَإِنَّهُ رِبًا
‘আবু বুরদাহ (রহ.) বলেন, আমি মদিনায় গেলাম; আবদুল্লাহ ইবনে সালামের সাথে আমার দেখা হল। তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমাদের এখানে আসবে না? তোমাকে আমি খেজুর ও ছাতু খেতে দেব এবং একটি ঘরে থাকতে দেব। অতঃপর তিনি বললেন, তুমি এমন স্থানে (ইরাকে) বসবাস কর, যেখানে সুদের কারবার খুব ব্যাপক। যখন কোনো মানুষের নিকট তোমার কোনো প্রাপ্য থাকে আর সেই মানুষটি যদি তোমাকে কিছু ঘাস, খড় অথবা খড়ের ন্যায় সামান্য কিছুও হাদীয়া পেশ করে তার কাছ থেকে তা গ্রহণ করো না, যেহেতু তা সুদের অন্তর্ভুক্ত।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৮১৪]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/7620/article-details.html