প্রশ্ন
কিছুদিন আগে কুরআনের ঘটনা সম্বলিত একটি বইয়ে পেলাম, আল্লাহ তাআলা এক ব্যক্তিকে একশত বছরের জন্য মৃত্যু দান করে পুনরায় আবার জীবিত করেন। আমি জানতে চাচ্ছি, উক্ত ব্যক্তিটি কে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
আপনি যে ঘটনাটির কথা উল্লেখ করেছেন তা সূরা বাকারার ২৫৯ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
أَوْ كَالَّذِي مَرَّ عَلَى قَرْيَةٍ وَهِيَ خَاوِيَةٌ عَلَى عُرُوشِهَا قَالَ أَنَّى يُحْيِي هَذِهِ اللَّهُ بَعْدَ مَوْتِهَا فَأَمَاتَهُ اللَّهُ مِائَةَ عَامٍ ثُمَّ بَعَثَهُ قَالَ كَمْ لَبِثْتَ قَالَ لَبِثْتُ يَوْمًا أَوْ بَعْضَ يَوْمٍ قَالَ بَلْ لَبِثْتَ مِائَةَ عَامٍ فَانْظُرْ إِلَى طَعَامِكَ وَشَرَابِكَ لَمْ يَتَسَنَّهْ وَانْظُرْ إِلَى حِمَارِكَ وَلِنَجْعَلَكَ آيَةً لِلنَّاسِ وَانْظُرْ إِلَى الْعِظَامِ كَيْفَ نُنْشِزُهَا ثُمَّ نَكْسُوهَا لَحْمًا فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُ قَالَ أَعْلَمُ أَنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
‘অথবা সে ব্যক্তির মত, যে কোন জনপদ অতিক্রম করছিল, যা তার ছাদের উপর বিধ্বস্ত ছিল। সে বলল, ‘আল্লাহ একে কিভাবে জীবিত করবেন মরে যাওয়ার পর’? অতঃপর আল্লাহ তাকে এক’শ বছর মৃত রাখলেন। এরপর তাকে পুনর্জীবিত করলেন। বললেন, ‘তুমি কতকাল অবস্থান করেছ’? সে বলল, ‘আমি একদিন অথবা দিনের কিছু সময় অবস্থান করেছি’। তিনি বললেন, ‘বরং তুমি এক’শ বছর অবস্থান করেছ। সুতরাং তুমি তোমার খাবার ও পানীয়ের দিকে তাকাও, সেটি পরিবর্তিত হয়নি এবং তুমি তাকাও তোমরা গাধার দিকে, আর যাতে আমি তোমাকে মানুষের জন্য দৃষ্টান্ত বানাতে পারি এবং তুমি তাকাও হাড়গুলোর দিকে, কিভাবে আমি তা সংযুক্ত করি, অতঃপর তাকে আবৃত করি গোশত দ্বারা’। পরে যখন তার নিকট স্পষ্ট হল, তখন সে বলল, ‘আমি জানি, নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’।’ [সূরা বাকারা, আয়াত: ২৫৯]
আয়াতে বর্ণিত উক্ত ব্যক্তি কে, তা নিয়ে মুফাসসিরগণের মাঝে মতভেদ রয়েছে। তবে প্রসিদ্ধ মতানুযায়ী তিনি হলেন উযাইর (আ.)। আল্লামা ইবনে কাসীর (রহ.) তার তাফসীর গ্রন্থে লিখেন,
اخْتَلَفُوا فِي هَذَا الْمَارِّ مَنْ هُوَ، فَرَوَى ابْنُ أَبِي حَاتِمٍ، عَنْ عِصَامِ بْنِ رَوَّادٍ، عَنْ آدَمَ بْنِ أَبِي إِيَاسٍ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ نَاجِيَةَ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، أَنَّهُ قَالَ: هُوَ عُزَيْرٌ. وَرَوَاهُ ابْنُ جَرِيرٍ عَنْ نَاجِيَةَ نَفْسِهِ، وَحَكَاهُ ابْنُ جَرِيرٍ وَابْنُ أَبِي حَاتِمٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَالْحَسَنِ وَقَتَادَةَ وَالسُّدِّيِّ وَسُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ، وَهَذَا الْقَوْلُ هُوَ الْمَشْهُورُ
‘অতিক্রমকারী কে ছিলেন তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। আলী (রা.) বলেন, তিনি ছিলেন উযাইর (আ.)। ইবনে আব্বাস (রা.), হাসান বসরি ও কাতাদাহ (রহ.) থেকেও এমনটি বর্ণিত আছে। আর এ মতটিই প্রসিদ্ধ।’ [তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/৫২৭]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/7458/article-details.html