প্রশ্ন
আমি নাস্তিকদের একটি ওয়েব সাইটে পড়েছি, ইসলাম নাকি মানুষকে চিন্তা ও গবেষণা করতে নিষেধ করে। আসলে কি তাই? এ কারণে আমার মনে মাঝে মাঝে ইসলাম সম্পর্কে সংশয়ের সৃষ্টি হয়। অনুগ্রহ করে আমার মনের সংশয় দূর করবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ইসলাম মানুষকে চিন্তা ও গবেষণা করতে নিষেধ করে না, বরং উৎসাহিত করে। কুরআনের অসংখ্য আয়াতে মানুষকে চিন্তা ও গবেষণা করতে বলা হয়েছে। তবে সেই চিন্তা ও গবেষণা হতে হবে কুরআন হাদিসের আলোকে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ لِيَدَّبَّرُوا آيَاتِهِ وَلِيَتَذَكَّرَ أُولُو الْأَلْبَابِ
‘এটি একটি কল্যাণময় কিতাব তোমার কাছে অবতীর্ণ করেছি যাতে তারা এর আয়াতগুলোর প্রতি চিন্তা-ভাবনা করে, আর জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা উপদেশ গ্রহণ করে থাকে।’ [সূরা ছাদ, আয়াত: ২৯]
আরেক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে,
أَوَلَمْ يَتَفَكَّرُوا فِي أَنْفُسِهِمْ مَا خَلَقَ اللَّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا إِلَّا بِالْحَقِّ وَأَجَلٍ مُسَمًّى وَإِنَّ كَثِيرًا مِنَ النَّاسِ بِلِقَاءِ رَبِّهِمْ لَكَافِرُونَ
‘তারা কি তাদের মনে ভেবে দেখে না যে, আল্লাহ আকাশমন্ডলী, পৃথিবী ও এ দু’এর মধ্যবর্তী সবকিছু সৃষ্টি করেছেন যথাযথভাবে ও নির্দিষ্ট কালের জন্য, কিন্তু অনেক মানুষ তাদের প্রতিপালকের সাক্ষাতে নিশ্চিতই অবিশ্বাসী।’ [সূরা রূম, আয়াত: ৮]
চিন্তা ও গবেষণা করার প্রতি গুরুত্বারোপের পাশাপাশি ইসলাম এটিকে ইবাদত হিসেবেও গণ্য করেছে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
‘নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং রাত ও দিনের বিবর্তনের মধ্যে রয়েছে বিবেকসম্পন্নদের জন্য বহু নির্দশন।যারা আল্লাহকে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও কাত হয়ে এবং আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে। (বলে) ‘হে আমাদের রব, তুমি এসব অনর্থক সৃষ্টি করনি। তুমি পবিত্র মহান। সুতরাং তুমি আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা কর’।’ [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯০-১৯১]
ইসলাম যে চিন্তা ও গবেষণা করতে নিষেধ করে না- এই ব্যাপারে আপনার সংশয় আশা করি দূর হয়েছে। এখন আপনার জন্য আমাদের পরামর্শ হল, নাস্তিকদের ওয়েব সাইটে প্রবেশ না করা। কারণ একজন সাধারণ মানুষের জন্য বিধর্মীদের কোনো বই পুস্তক পড়া, বা তাদের বাতিল চিন্তারাধারা প্রচারকারী ওয়েব সাইটে প্রবেশ করা কিছুতেই উচিৎ নয়। এতে অনেক সময় হীতে বিপরীত হয়।
আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ ৩৪/১৮৫
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/7013/article-details.html