প্রশ্ন
বর্তমানে অনেক নারীকে দেখা যায় আঁটসাঁট পায়জামা পরতে। এগুলোকে চুস পায়জামা বলে। এতে শারীরিক গঠন বুঝা যায়। আমি জানতে চাচ্ছি, এ জাতীয় পায়জামা নারীরা পরতে পারবে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
পোশাকের ক্ষেত্রে ইসলামের মূলনীতি হলো, পোশাক এমন হওয়া যার দ্বারা সতর পরিপূর্ণভাবে ঢাকা থাকে। এমন পাতলা বা আঁটসাঁট হতে পারবে না যার দ্বারা শরীরের গঠন আকৃতি বাহির থেকে বুঝা যায়। যারা পাতলা বা আঁটসাঁট পোশাক পরিধান করবে, হাদিস শরিফে তাদেরকে কঠোর ভাষায় অভিসম্পাত করা হয়েছে।
হাদিস শরিফে এসেছে,
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন: ‘দুই শ্রেণীর জাহান্নামীকে আমি দেখিনি, (অর্থাৎ পরবর্তী যুগে এদের সন্ধান পাওয়া যাবে) একশ্রেণী ঐ সকল মানুষ যাদের সাথে গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকবে, যার দ্বারা তারা মানুষকে প্রহার করবে। দ্বিতীয় শ্রেণী হলো ঐ সকল নারী যারা পোশাক পরিহিতা হয়েও উলঙ্গ (কেননা তারা এমন পোশাক পরবে যার দ্বারা সতর পূর্ণরূপে ঢাকা হয় না। পাতলা হওয়ার কারণে সতরের আকৃতি ফুটে উঠে।) যারা নিজে গুনাহর দিকে ধাবিত এবং অন্যকেও অশ্লীলতার প্রতি আকৃষ্ট করে। তাদের মাথা হবে লম্বা গর্দানবিশিষ্ট উটের হেলে পড়া কুঁজের ন্যায়। (অর্থাৎ তারা চুল কিংবা কৃত্রিম কোনো বস্তু মাথায় পেঁচাবে। যার ফলে তাদের মস্তক ফুলে থাকবে) এরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এমনকি জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের ঘ্রাণ অনেক অনেক দূর থেকেও পাওয়া যায়।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২১২৮]
আরেক হাদিসে এসেছে,
উসামা ইবনে যায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘দিহয়া কালবী (রা.) রাসূল (সা.)-কে যে কাপড় হাদিয়া দিয়েছেন সেগুলোর মধ্য থেকে একটি মোটা কাপড় (যা খুব নরম হয়ে থাকে) তিনি আমাকে পরিধান করার জন্য দেন। আমি কাপড়টি আমার স্ত্রীকে পরতে দিয়েছি। রাসূল (সা.) আমাকে বললেন, কী ব্যাপার, তুমি কুবতী কাপড়টি পরিধান করনি কেন? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তা আমার স্ত্রীকে পরতে দিয়েছি। তখন তিনি আমাকে বললেন, তুমি তাকে নির্দেশ দাও সে যেন এর নিচে আরেকটা কাপড় পরে নেয়। কারণ, আমার ভয় হচ্ছে যে, ঐ কাপড়টি তার হাড়ের আকৃতি বর্ণনা করবে।’ [মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২১৭৮৬]
সুতরাং চুস পায়জামা যেহেতু শরীরের সাথে আঁটসাঁট হয়ে লেগে থাকে এবং শরীরের অবয়ব বাহির থেকে স্পষ্ট বুঝা যায়, তাই নারীরা চুস পায়জামা পরতে পারবে না।
তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ৪/২০০
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/4967/article-details.html