প্রশ্ন
আমি শুনেছি, ইসলামে জিহাদের ফযিলত অনেক। জিহাদের গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই আমি এ বিষয়ে কুরআনের কিছু আয়াত ও হাদিস জানতে চাচ্ছি।
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ইসলাম শান্তির ধর্ম। আর এই শান্তিকে রক্ষা করার জন্যই কখনো কখনো অপরাধীদের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করতে হয়। তাই আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের জন্য জিহাদের বিধান দিয়েছেন।
জিহাদের ফযিলত অনেক। কুরআনের বহু আয়াতে এবং বহু হাদিসে জিহাদের ফযিলতের বিষয়টি বিবৃত হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে বলেন:
لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرُ أُولِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ فَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ عَلَى الْقَاعِدِينَ دَرَجَةً وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَى وَفَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ عَلَى الْقَاعِدِينَ أَجْرًا عَظِيمًا. دَرَجَاتٍ مِنْهُ وَمَغْفِرَةً وَرَحْمَةً وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا
‘মুমিনদের মধ্যে যারা কোনো সঙ্গত কারণ না থাকা সত্ত্বেও জিহাদে অংশ নেয় না এবং যারা জান-মাল দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করে তারা সমান নয় ৷ আল্লাহ তাআলা, যারা জিহাদে অংশ নেয়নি তাদের তুলনায় জিহাদকারীদের মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন, যদিও আল্লাহ প্রত্যেককেই পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ৷ মহা পুরস্কারের ক্ষেত্রে আল্লাহ মুজাহিদদেরকে যারা জিহাদে অংশ নেয়নি, তাদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন । এসব তার পক্ষ থেকে পদমর্যাদা, ক্ষমা ও দয়া ৷ আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াময়৷’ [সূরা নিসা, আয়াত: ৯৫-৯৬]
হাদিস শরিফে এসেছে,
‘আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রশ্ন করা হলো: হে আল্লাহর রাসূল, কোন কাজ জিহাদের সমতুল্য হতে পারে? তিনি বললেন: তোমরা তা করতে পারবে না। তারা দুই অথবা তিনবার একই প্রশ্ন করল। প্রতি বারই তিনি বললেন: তোমরা তা করতে পারবে না। তৃতীয় বারে তিনি বললেন: আল্লাহ তাআলার রাস্তায় জিহাদকারী লোকের সাথে এমন লোকের তুলনা হতে পারে যে লোক অক্লান্তভাবে নামায-রোজায় ব্যস্ত থাকে যতক্ষণ না আল্লাহ তাআলার পথের মুজাহিদ ফিরে না আসে।’ [জামে তিরমিযি, হাদিস: ১৬১৯]
আরেক হাদিসে এসেছে,
মিকদাব ইবনু মাদীকারিব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ‘শহীদের জন্য আল্লাহ তাআলার নিকট ছয়টি পুরস্কার বা সুযোগ আছে। তাঁর প্রথম রক্তবিন্দু পড়ার সাথে সাথে তাকে ক্ষমা করা হয়, তাকে তার জান্নাতের বাসস্থান দেখানো হয়, কবরের আযাব হতে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়, সে কঠিন ভীতি হতে নিরাপদ থাকবে, তার মাথায় মর্মর পাথর খচিত মর্যাদার টুপি পরিয়ে দেওয়া হবে। এর এক একটি পাথর দুনিয়া ও তার মধ্যকার সবকিছু হতে উত্তম। তার সাথে টানা টানা আয়তলোচনা বাহাত্তর জন জান্নাতী হূরকে বিয়ে দেওয়া হবে এবং তার সত্তরজন নিকটাত্মীয়ের জন্য তার সুপারিশ কবুল করা হবে’। [জামে তিরমিযি, হাদিস: ১৬৬৩]
আরেক হাদিসে এসেছে,
আনাস ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘আমার পথে জিহাদকারীর জন্য আমি নিজেই যামিন। আমি তার জীবনটা নিয়ে নিলে তবে তাকে জান্নাতের উত্তরাধিকারী বানিয়ে দেই। আমি তাকে (যুদ্ধক্ষেত্র হতে) ফিরিয়ে আনলে তবে তাকে সওয়াব বা গানীমত-সহ ফিরিয়ে আনি’। [জামে তিরিমিযি, হাদিস: ১৬২০]
এছাড়াও বহু হাদিসে জেহাদের ফযিলতের কথা উল্লেখ রয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/4656/article-details.html