প্রশ্ন
আমার একবন্ধু বলে থাকে, বর্তমানে ব্যাংকিং সুদ রিবার অন্তর্ভুক্ত নয়। কারণ, রাসূলের যুগে ব্যাংকিং ব্যবস্থা ছিল না। তার এই বক্তব্য কি সঠিক?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
রিবা এবং সুদ একই বিষয়। রাসূলের যুগে বর্তমানের মতো ব্যাংকিং ব্যবস্থা না থাকলেও প্রচলিত পদ্ধতির সুদের প্রচলন ছিল।
তাছাড়া প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থা রাসূল (সা.) এবং সাহাবায়ে কেরামের যুগে না থাকলেও প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থায় যে ধরনের সুদের লেনদেন হয় অর্থাৎ কমার্শিয়াল সুদ এর অস্তিত্ব রাসূল (সা.) এবং সাহাবায়ে কেরামের যুগে বিদ্যমান ছিল। কারণ রিবার বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসূল (সা.) সর্বপ্রথম আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের সুদকে রহিত করেছেন। [আবু দাউদ, হাদিস: ৪২৭]
আর আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের যে বিশাল পরিমাণ সুদ ছিল তা থেকে বুঝা যায় যে, তা ছিল কমার্শিয়াল সুদ।
এ কারণেই কুরআনে শর্তহীনভাবে সুদকে হারাম করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং, আপনার বন্ধুর বক্তব্যটি ভুল ও কুরআনের ভ্রান্ত ব্যাখ্যা।
আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে ইরশাদ করেন,
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَ ذَرُوْا مَا بَقِیَ مِنَ الرِّبٰۤوا اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا فَاْذَنُوْا بِحَرْبٍ مِّنَ اللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ ۚ وَ اِنْ تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُءُوْسُ اَمْوَالِكُمْ ۚ لَا تَظْلِمُوْنَ وَ لَا تُظْلَمُوْنَ
‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে অংশই অবশিষ্ট রয়ে গেছে তা ছেড়ে দাও। যদি তোমরা মুমিন হও। যদি তোমরা না ছাড় তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও। আর তোমরা যদি তওবা কর তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই। তোমরাও কারো প্রতি যুলুম করবে না এবং তোমাদের প্রতিও যুলুম করা হবে না।’[সূরা বাকারা, আয়াত: ২৭৮-২৭৯]
অন্য আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে,
وَ اَحَلَّ اللّٰهُ الْبَیْعَ وَ حَرَّمَ الرِّبٰوا
‘অথচ আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন।’[সূরা বাকারা, আয়াত: ২৭৫]
রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন,
‘সুদগ্রহীতা, দাতা, এর লেখক ও সাক্ষীগণ সবাই অভিশপ্ত।’[সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৫৯৮]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/4620/article-details.html