প্রশ্ন
আমার এক বন্ধু শিকার করতে গিয়ে ভুলবশত একজন লোককে হত্যা করে ফেলে। এক্ষেত্রে তার কী করণীয়?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ভুলবশত কেউ যদি কাউকে হত্যা করে ফেলে তাহলে ইসলাম এক্ষেত্রে কাফফারার বিধান রেখেছে। কাফফারার দুটি অংশ রয়েছে। যথা:
প্রথমত, একজন মুসলমান দাস বা দাসী আযাদ করে দেওয়া। তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে লাগাতার দুইমাস রোযা রাখা।
দ্বিতীয়ত, দিয়াত তথা আর্থিক ক্ষতিপূরণ। আর তা হল, ১০০ উট বা ২০০ গরু বা ২ হাজার বকরি। আর মূল্যের মাধ্যমে দিলে দশ হাজার দিরহাম বা তার সমপরিমাণ মূল্য(এক দিরহাম=২.৯৭৫ গ্রাম রূপা) বা এক হাজার দিনার বা তার সমপরিমাণ মূল্য (এক দিনার=৪.২৫ গ্রাম স্বর্ণ) নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিকারিদের দিতে হবে।
আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে ইরশাদ করেন,
وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ أَنْ يَقْتُلَ مُؤْمِنًا إِلَّا خَطَأً وَمَنْ قَتَلَ مُؤْمِنًا خَطَأً فَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مُؤْمِنَةٍ وَدِيَةٌ مُسَلَّمَةٌ إِلَى أَهْلِهِ إِلَّا أَنْ يَصَّدَّقُوا فَإِنْ كَانَ مِنْ قَوْمٍ عَدُوٍّ لَكُمْ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مُؤْمِنَةٍ وَإِنْ كَانَ مِنْ قَوْمٍ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ مِيثَاقٌ فَدِيَةٌ مُسَلَّمَةٌ إِلَى أَهْلِهِ وَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مُؤْمِنَةٍ فَمَنْ لَمْ يَجِدْ فَصِيَامُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ تَوْبَةً مِنَ اللَّهِ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا
‘আর কোন মুমিনের কাজ নয় অন্য মুমিনকে হত্যা করা, তবে ভুলবশত (হলে ভিন্ন কথা)। যে ব্যক্তি ভুলক্রমে কোন মুমিনকে হত্যা করবে, তাহলে একজন মুমিন দাসকে মুক্ত করতে হবে এবং দিয়াত (রক্ত পণ দিতে হবে) যা হস্তান্তর করা হবে তার পরিজনদের কাছে। তবে তারা যদি সদাকা (ক্ষমা) করে দেয় (তাহলে দিতে হবে না)। আর সে যদি তোমাদের শত্রু কওমের হয় এবং সে মুমিন, তাহলে একজন মুমিন দাস মুক্ত করবে। আর যদি এমন কওমের হয় যাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সন্ধিচুক্তি রয়েছে তাহলে দিয়াত দিতে হবে, যা হস্তান্তর করা হবে তার পরিবারের কাছে এবং একজন মুমিন দাস মুক্ত করতে হবে। তবে যদি না পায় তাহলে একাধারে দু’মাস সিয়াম পালন করবে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমাস্বরূপ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ৯২]
হেদায়া ৪/৪৬০; রাওয়াইয়ুল বয়ান ফি তাফসিরি আয়াতিল আহকাম ১/৩৬০
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/4257/article-details.html