প্রশ্ন
শবে বরাতের রাতে ও দিনে কোনো বিশেষ আমলের কথা হাদিসে আছে কী?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
শবে বরাতের রাতে ইবাদতের বিশেষ কোনো পদ্ধতি শরিয়তে নির্দিষ্ট নেই। তবে এক হাদিস থেকে বুঝা যায়, এ রাতে দীর্ঘ নফল নামাজ পড়া শরিয়তে কাম্য।
হাদিসে এসেছে,
‘হযরত আলা ইবনুল হারিস (রহ.) থেকে বর্ণিত, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, একবার রাসূল (সা.) রাতে নামাযে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সেজদা করেন যে, আমার ধারণা হল তিনি হয়ত মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামায শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা অথবা বলেছেন, ও হুমাইরা, তোমার কি এই আশংকা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না, ইয়া রাসূল (সা.)। আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার এই আশংকা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। রাসূল (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জান এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন। রাসূল (সা.) তখন ইরশাদ করলেন, এটা হল অর্ধ শাবানের রাত (শাবানের চৌদ্দ তারিখের দিবাগত রাত)। আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে তার বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই।’ [শুআবুল ঈমান ৩/৩৮২-৩৬৮]
আর অন্য হাদিসে দিনে রোযা রাখার কথা বলা হয়েছে,
عن على بن ابى طالب رضى الله عنه قال : قال رسول الله : إذا كانت ليلة النصف من شعبان فقوموا ليلها وصوموا نهارها, فإن الله ينزل فيهالغروب الشمس الى سماء الدنيا, فيقول : ألا من مستغفر فاغفر له على مستزرق فأرزقه, ألا مبتلى فأعافيه , ألا كذا, ألا كذا, حتى يطلع الفجر
‘হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, শাবানের রাত (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগীতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোযা রাখ। কেননা, এ রাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে আসেন এবং বলেন, কোন ক্ষমাপ্রার্থী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করব। আছে কি কোন রিযিক প্রার্থী? আমি তাকে রিযিক দেব। এভাবে সুব্হে সাদিক পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রয়োজনের কথা বলে তাদের ডাকতে থাকেন।’ [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৩৮৪]
এই বর্ণনাটির সনদ যয়ীফ। কিন্তু হাদিস বিশারদগলের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হল, ফাযায়েলের ক্ষেত্রে যয়ীফ হাদিস গ্রহণযোগ্য।
তাছাড়া এ দিন যেহেতু আইয়ামে বীজের অন্তর্ভুক্ত তাই জরুরি মনে না করে কেউ যদি রোযা রাখে তাহলে আশা করা যায় যে, সে সওয়াব পাবে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/4206/article-details.html