প্রশ্ন
একজন যোদ্ধা কাদেরকে হত্যা করতে পারবে এবং কাদেরকে হত্যা করতে পারবে না? এক্ষেত্রে ইসলাম কর্তৃক কোনো নিয়ম-নীতি নির্ধারিত আছে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ইসলামে যুদ্ধনীতির গুরুত্বপূর্ণ কিছু নীতি হলো অমুসলিমদের সাথে যুদ্ধ করার পূর্বে তাদেরকে প্রথমে ইসলামের দাওয়াত দিবে। যদি তারা ইসলাম গ্রহণ করে নেয় তাহলে তার সাথে যুদ্ধ করা যাবে না।
যদি ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে জিযিয়া কর দেওয়ার আহ্বান করবে। যদি জিযিয়া কর দিতে সম্মত হয় তাহলে তাদের সাথে যুদ্ধ করা যাবে না। যদি ইসলাম গ্রহণও না করে আবার জিযিয়া কর দিতেও অস্বীকৃতি জানায় তাহলে তখন তাদের সাথে যুদ্ধ করা যাবে।
আরো কিছু মূলনীতি হলো অমুসলিমদের সাথে কোনো চুক্তি ভঙ্গ করা যাবে না। শিশু, নারী, বৃদ্ধ, দুর্বল, যারা যুদ্ধে শরীক নয় তাদেরকে হত্যা করা যাবে না। নিহতদের অঙ্গহানী করা যাবে না ইত্যাদি।
হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে,
‘হযরত সুলায়মান বিন বুরায়দা (রা.) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন কোন বড় কিংবা ছোট সেনাদলের উপর কাউকে আমীর নিযুক্ত করতেন, তখন তাকে বিশেষভাবে আল্লাহকে ভয় করে চলার এবং তার সঙ্গী মুসলমানদের সাথে উত্তম ব্যবহার করার উপদেশ দিতেন। অতঃপর বলতেন, আল্লাহর নামে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধে গমন কর এবং যারা আল্লাহর সাথে কুফরী করে তাদের সাথে যুদ্ধ কর। সাবধান! জিহাদ কর, কিন্তু গণীমতের মালে খেয়ানত করো না, চুক্তি ভঙ্গ করো না, নিহতদের অঙ্গহানি করো না, কোন শিশুকে হত্যা করো না। কাফেরদের মুকাবিলায় তুমি তাদেরকে তিনটি কথার প্রতি আহবান জানাবে। যদি তারা সেগুলি মেনে নেয়, তাহলে তাদের প্রতি আক্রমণ করা থেকে বিরত হবে। (১) তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিবে। (২) যদি তারা ইসলাম কবুল করে, তাহলে তারা তাদের নিজ এলাকা থেকে মুসলমানদের এলাকায় হিজরত করে চলে আসবে এবং তারা মুহাজিরগণের ন্যায় (গণীমত ইত্যাদির) অধিকার প্রাপ্ত হবে। (৩) ইসলাম কবুলের পরেও যদি তারা হিজরত করে আসতে রাযী না হয়, তাহলে তারা বেদুঈন মুসলমানদের মত সেখানে থাকবে এবং আল্লাহর বিধানসমূহ পালন করবে।
পক্ষান্তরে যদি তারা ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকার করে, তাহলে তাদের নিকট থেকে জিযিয়া দাবী কর এবং তাদের প্রতি আক্রমণ করা হতে বিরত থাক। যদি তারা জিযিয়া দিতে অস্বীকার করে, তাহলে আল্লাহর প্রতি ভরসা কর এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর। আর যদি তুমি কোন দুর্গ অবরোধ কর, আর তারা তোমাদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হতে চায়, তাহলে তোমরা নিজ দায়িত্বে তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে পার। এ সময় আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নামে চুক্তি করো না। কেননা (যদি কোন কারণে উক্ত চুক্তি ভঙ্গ করতে বাধ্য হও, তখন) আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নামে কৃত চুক্তি ভঙ্গ করা অপেক্ষা তোমাদের কৃত চুক্তি ভঙ্গ করা অধিকতর সহজ।’[সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৭৩১]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/4135/article-details.html