প্রশ্ন
আমার খ্রিস্টান বন্ধু রয়েছে। তার দাবি হলো, ঈসা (আ.) মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু আমি তো জানি ঈসা (আ.)-কে আল্লাহ তাআলা উপরে উঠিয়ে নিয়েছেন। তার কথা শুনে আমি কিছুটা সন্দিহান হয়ে পড়ি। দয়া করে এ ব্যাপারে আমাকে কুরআন-হাদিসের কথা জানাবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ঈসা (আ.)-কে আল্লাহ তাআলা উপরে উঠিয়ে নিয়েছেন -এটাই বিশুদ্ধ ও প্রমাণসিদ্ধ কথা। এ ব্যাপারে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। কারণ তাকে আকাশে উঠিয়ে নেওয়ার বিষয়টি এবং কেয়ামতের পূর্বে পুনরায় তার অবতরণের বিষয়টি অকাট্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত।
আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে ইরশাদ করেন:
وَمَا قَتَلُوهُ وَمَا صَلَبُوهُ وَلَكِنْ شُبِّهَ لَهُمْ وَإِنَّ الَّذِينَ اخْتَلَفُوا فِيهِ لَفِي شَكٍّ مِنْهُ مَا لَهُمْ بِهِ مِنْ عِلْمٍ إِلَّا اتِّبَاعَ الظَّنِّ وَمَا قَتَلُوهُ يَقِينًا بَلْ رَفَعَهُ اللَّهُ إِلَيْهِ وَكَانَ اللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا
‘মূলত তারা তাঁকে হত্যা করতে পারেনি এবং ক্রুশবিদ্ধও করতে পারেনি; বরং তাদেরকে সন্দেহে ফেলা হয়েছে। নিশ্চয়ই যারা তাতে মতবিরোধ করেছিল তারাই সে বিষয়ে সন্দেহে রয়েছে। কল্পনার অনুসরণ ব্যতীত এ বিষয়ে তাদের কোনো জ্ঞান নেই। প্রকৃতপক্ষে তারা তাঁকে হত্যা করতে পারেনি। প্রকৃত কথা এই যে, আল্লাহ তাঁকে নিজের দিকে উঠিয়ে নিয়েছেন। আল্লাহ পরাক্রান্ত, মহাজ্ঞানী।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ১৫৭-১৫৮]
রাসূল (সা.) বলেন,
عَنِ أَبي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قال: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، لَيُوشِكَنَّ أَنْ يَنْزِلَ فِيكُمْ ابْنُ مَرْيَمَ حَكَمًا مُقْسِطًا، فَيَكْسِرَ الصَّلِيبَ، وَيَقْتُلَ الخِنْزِيرَ، وَيَضَعَ الجِزْيَةَ، وَيَفِيضَ المَالُ حَتَّى لاَ يَقْبَلَهُ أَحَدٌ
‘যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ, অবশ্যই তোমাদের মাঝে ন্যায়পরায়ণ শাসক হিসেবে ইবনে মারয়ামের অবতরণ ঘটবে। অতপর তিনি ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শুকর হত্যা করবেন, জিজিয়া রহিত করবেন। তখন সম্পদ এত বেশি বেড়ে যাবে যে, তা গ্রহণ করার মতো কেউ থাকবে না।’ সহিহ বুখারি, হাদিস: ২২২২; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৫৫
এ ধরনের আরও অসংখ্য হাদিস রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে সংশয়ের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই।
শারহু সহিহ মুসলিম ২/১৯০; ফাতহুল বারী ৬/৪৯১
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/3495/article-details.html