প্রশ্ন
কুরআন ও হাদিসের মাঝে মৌলিক পার্থক্যগুলো কী কী?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
কুরআন ও হাদিস উভয়টিই ওহীর উৎস থেকে উৎসারিত হলেও এতদুভয়ের মাঝে নানা দিক দিয়ে পার্থক্য বিদ্যমান। কিছু মৌলিক পার্থক্য নিম্নে তুলে ধরা হলো:
১. কুরআন মাজিদ এক অপূর্ব মুজিযা। তা কেবল শব্দ, ভাষা ও সাহিত্যের দিক দিয়েই মুজিযা নয়। এর বিষয়বস্তু, আলোচ্য বিষয়ের ব্যাপকতা, প্রসারতা, গভীরতা ও সূক্ষ্মতা এবং তার উপস্থাপিত মানব কল্যাণকর পূর্ণঙ্গ জীবনব্যবস্থাও এক অপূর্ব ও বিস্ময়কর মুজিযা। পক্ষান্তরে হাদিসসমূহ কুরআনের ন্যায় মুজিযা নয়।
২. কুরআন মাজিদ হচ্ছে অহিয়ে মাতলু। কুরআন মাজিদের ভাব-শব্দ সবকিছুই আল্লাহর নিকট হতে অবতীর্ণ। তা জীবরীল আমীনের মাধ্যমে রাসূল (সা.) এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে। এর শব্দ ও ভাব কোনোটির মাঝেই কোনো মানুষ বা ফেরেশতার দখল নেই। নামাজে তা সুনির্দিষ্টভাবে পাঠ করা অবশ্য কর্তব্য। পক্ষান্তরে হাদিসের মূল কথাটিই শুধু ওহীর মাধ্যমে রাসূল (সা.) এর পবিত্র হৃদয়পটে প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি নিজ ভাষায় তা জনসম্মুখে পেশ করেছেন। এ জন্য তার ভাষ্য মাতলু বা নয়; তার ভাষা ও শব্দের তেলাওয়াত করা জরুরি নয়। বরং তার মূল বক্তব্য ও ভাবধারা অনুসরণ করার জন্যই শরীয়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৩. সর্বোত্তম কালাম হচ্ছে কুরআন মাজিদ। অলৌকিক বৈশিষ্ট্যের কারণে তা কালজয়ী। তার প্রত্যেকটি শব্দ সর্বপ্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংযোজন ও বিয়োজন থেকে চিরসুরক্ষিত। পক্ষান্তরে হাদিসসমূহ এ মানে উত্তীর্ণ নয়।
৪. কুরআন বিনা ওজুতে স্পর্শ করা নাজায়েয। পক্ষান্তরে হাদিস এমনি নয়।
৫. কুরআনের সামান্য অংশও কেউ অস্বীকার করলে সে নিশ্চিত কাফের হয়ে যাবে। কিন্তু হাদিসের ক্ষেত্রে বিষয়টি ব্যাখ্যাসাপেক্ষ।
আলহাদিস ওয়াল মুহাদ্দিসুন, পৃ. ১১-১৬
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/3260/article-details.html