প্রশ্ন
জনৈক ব্যক্তি বললেন পর নারীর দিকে তাকানো নাকি ছগিরা গুনাহ! তিনি কোনো এক কিতাবে পড়েছেন। বিষয়টি কি আসলেই এমন? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
ওই ব্যক্তির কথা সঠিক নয়। ইমাম নববী (রহ.) তার বিখ্যাত হাদিসগ্রন্থ “রিয়াদুস সালিহীন” এ অধ্যায় দাঁড় করিয়েছেন,
“باب تحريم النظر إِلَى المرأة الأجنبية والأمرد الحسن لغير حاجة شرعية:
“গায়ের মাহরাম নারী এবং শ্মশ্রুবিহীন ছেলেদের দিকে শরঈ প্রয়োজন ছাড়া তাকানো হারাম হওয়ার অধ্যায়”। সেখানে তিনি নিচের আয়াতগুলো এবং হাদিসটি উল্লেখ করেছেন। দেখুন-
১.
قُلۡ لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ یَغُضُّوۡا مِنۡ اَبۡصَارِہِمۡ وَیَحۡفَظُوۡا فُرُوۡجَہُمۡ ؕ ذٰلِکَ اَزۡکٰی لَہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ خَبِیۡرٌۢ بِمَا یَصۡنَعُوۡنَ
মুমিন পুরুষদের বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটাই তাদের জন্য শুদ্ধতর। তারা যা-কিছু করে আল্লাহ সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবগত। (সুরা নুর, আয়াত: ৩০)
২.
اِنَّ السَّمۡعَ وَالۡبَصَرَ وَالۡفُؤَادَ کُلُّ اُولٰٓئِکَ کَانَ عَنۡہُ مَسۡـُٔوۡلًا
জেনে রেখ, কান, চোখ ও অন্তর এর প্রতিটি সম্পর্কে (তোমাদেরকে) জিজ্ঞেস করা হবে। (সুরা ইসরা, আয়াত: ৩৬)
৩.
یَعۡلَمُ خَآئِنَۃَ الۡاَعۡیُنِ وَمَا تُخۡفِی الصُّدُوۡرُ
আল্লাহ জানেন চোখের অসাধুতা এবং সেইসব বিষয়ও, যা বক্ষদেশ লুকিয়ে রাখে। (সুরা গাফির, আয়াত: ১৯)
৪.
اِنَّ رَبَّکَ لَبِالۡمِرۡصَادِ ؕ
নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক সকলের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন। (সুরা ফাজর, আয়াত: ১৪)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” كُتِبَ عَلَى ابْنِ آدَمَ نَصِيبُهُ مِنَ الزِّنَى مُدْرِكٌ ذَلِكَ لاَ مَحَالَةَ فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ وَالأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الاِسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلاَمُ وَالْيَدُ زِنَاهَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ ” .
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, নবী (সা.) বলেছেন, আদম সন্তানের উপর যিনার যে অংশ লিপিবদ্ধ আছে তা অবশ্যই সে প্রাপ্ত হবে। দু’চোখের যিনা হল দৃষ্টিপাত করা, দু’কানের যিনা হল শ্রবণ করা, জিহ্বার যিনা হল কথোপকথন করা, হাতের যিনা হল স্পর্শ করা, পায়ের যিনা হল হেঁটে যাওয়া, অন্তরের যিনা হল আকৃষ্ট ও বাসনা করা। আর লজ্জাস্থান তা বাস্তবায়িত করে এবং মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬৫১৩)
উপরোক্ত আয়াতে কারীমা এবং হাদিস থেকে এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, নন মাহরাম মহিলাদের দিকে তাকানো কোনো সাধারণ অপরাধ নয়। বরং ভয়াবহ অপরাধ। করিবার গুনাহ ছাড়া এজাতীয় হুমকি-ধমকি আসেনি।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র:https://www.drkhalilurrahman.com/?p=29637&preview=true