প্রশ্ন
আমার এক বন্ধু মান্নত করেছিল যে, সন্তান হলে আত্মীয়-স্বজনকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াবে। পরর্তীতে তার একটি সন্তান হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে উক্ত মান্নত পূরণ করে নি। এখন সে জানতে চাচ্ছে যে, তার সন্তানের আকীকা আর মান্নতের নিয়ত একই পশুতে করলে কি তার মান্নত আদায় হবে? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
মান্নত শরিয়তে পছন্দনীয় নয়। শরিয়ত উদ্বুদ্ধ করে নফল সদকার প্রতি। মান্নতের প্রতি নয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন-
بَاكِرُوا بِالصَّدَقَةِ ؛ فَإِنَّ الْبَلَاءَ لَا يَتَخَطَّى الصَّدَقَةَ
“তোমরা দানের ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করবে। কেননা বিপদাপদ তাকে অতিক্রম করতে পারে না”। (সুনানে বাইহাকী, বর্ণনা: ৭৩৭৪)।
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يَوْمًا يَنْهَانَا عَنِ النَّذْرِ وَيَقُولُ إِنَّهُ لاَ يَرُدُّ شَيْئًا وَإِنَّمَا يُسْتَخْرَجُ بِهِ مِنَ الشَّحِيحِ
রাসূলুল্লাহ (সা.) একদিন আমাদের মান্নত করতে নিষেধ করেছেন। আর বলেছেন, মান্নত কোনো কিছুকে ফেরাতে পারে না। তবে মান্নতের মাধ্যমে কৃপণ ব্যক্তির সম্পদ বের করা হয়। (মুসলিম শরীফ, হাদিস: ৪৩২৫)।
মান্নত করার পর তা থেকে রুজু করার কোন সুযোগ নেই। তাই মান্নতকৃত ইবাদতটি করা আবশ্যক।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلْيُوفُوا نُذُورَهُم
“তারা যেন নিজেদের মান্নত পূর্ণ করে” (সূরা হজ্ব, আয়াত: ২৯)
কাজেই প্রশ্নোক্ত মান্নত অবশ্যই পূর্ণ করতে হবে। একই পশুতে মান্নত এবং আকিকা আদায় হবে না। কেননা আকিকা করা একটি স্বতন্ত্র সুন্নত।
আকিকা সম্পর্কে হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক শিশুরই আকিকা জরুরি।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২৮৪০; মুসনাদ আহমদ, হাদিস: ২০০৯৫)।
হজরত আলী বিন আবি তালেব (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি ছাগল দিয়ে হাসানের আকিকা দিলেন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৬০২; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৭৫৮৯)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ইহুদিরা পুত্রসন্তানের আকিকা করত কিন্তু কন্যাসন্তানের আকিকা করত না। তোমরা পুত্রসন্তানের জন্য দুটি ছাগল এবং কন্যাসন্তানের জন্য একটি ছাগল দিয়ে হলেও আকিকা করো।’ (সুনানে কুবরা, বায়হাকি, বর্ণনা: ১৯৭৬০; মুসনাদে বাযযার, বর্ণনা: ৮৮৫৭)
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র:https://www.drkhalilurrahman.com/?p=29420&preview=true