প্রশ্ন
কিছুদিন আগে আমার স্বামীর অসুস্থতার কারণে মোটা অংকের টাকার প্রয়োজন হয়। তখন পরিচিত কারো কাছে ঋণ চেয়েও পাইনি। এমতাবস্থায় আমার এক প্রতিবেশী আমাকে একটি সামাজিক সংগঠনের সভাপতির কাছে নিয়ে যান। সভাপতির কাছে আমি আমার অবস্থা বলার পর তিনি আমাকে বলেন, আমরা তো কারো থেকে সুদ নেই না। তবে আমাদের ঋণ প্রদানের নিয়ম হল যে, পঞ্চাশ হাজারের বেশি কাউকে ঋণ দেওয়া হয় না। আর ঋণ গ্রহীতাকে তিন হাজার টাকা দামের একটি ফরম কিনতে হয়। কেননা আমাদের দাপ্তরিক কিছু ব্যয় রয়েছে। তাছাড়া ফরম বিক্রির মাধ্যমে আমরা অন্যান্য জনকল্যাণমূলক কাজের তহবিল সংগ্রহ করি। প্রয়োজনের তাগিদে আমি এভাবেই ঋণ নিয়ে আসি। জানার বিষয় হল, উপরোক্ত পন্থায় ঋণ নেওয়া জায়েয হয়েছে কি না?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
ঋণ গ্রহিতার নিকট ফরম বিক্রির নাম করে অতিরিক্ত যে টাকা গ্রহণ করা হয়েছে তা সুস্পষ্ট সুদ। সুদ গ্রহণের জন্য ফরম বিক্রির ছুতা ও হীলা অবলম্বন করা হয়েছে। অতএব, এ পন্থায় অতিরিক্ত টাকা নেওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয ও সুদের অন্তর্ভুক্ত। আর সুদের আদান-প্রদান যেহেতু নাজায়েয তাই আপনার জন্য এ পন্থায় ঋণ গ্রহণ জায়েয হয়নি। আপনার করণীয় দ্রুত তাদের ঋণ পরিশোধ করে নিজেকে দায়মুক্ত করা। আর তাদের উচিত, হীলা-বাহানা করে সুদ গ্রহণ বন্ধ করা, আল্লাহ তাআলার কাছে তাওবা করা এবং বিগত দিনে যাদের কাছ থেকে এভাবে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করা হয়েছে তা তাদের ফিরিয়ে দেওয়া। অবশ্য এক্ষেত্রে ঋণ দিতে গিয়ে যদি কোনো বাস্তব খরচ হয়ে থাকে তাহলে শুধু সে পরিমাণটুকুই ঋণ গ্রহীতার কাছ থেকে নিতে পারবে। আর জানা কথা যে, সে খরচ খুবই নগণ্য পরিমাণের।
-বাদায়েউস সানায়ে ৬/৫১৮; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৬৬; ইলাউস সুনান ১৪/৫১৪; আননুতাফ ফিল ফাতাওয়া পৃ. ২৯৬
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র:https://www.drkhalilurrahman.com/?p=29328&preview=true