প্রশ্ন
আমরা চরাঞ্চলে বসবাস করি। এখানে আমার কিছু জমি আছে। এ অঞ্চলটি নিচু হওয়ায় বর্ষায় পানি বেশি হলে এখানের জমিগুলো প্রায় দেড়-দু’মাস চাষাবাদের অনুপযোগী থাকে। এ সময়ের ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে সংশয় হয়। অন্যান্য মালিকরা যেহেতু এ সময়ের ভাড়া আদায় করে থাকে, তাই আমিও নিই। এটা নেয়া কি বৈধ হবে? বর্ষার পর ফলন ভাল হলে তো তারা আমাদেরকে ভাড়া বেশি দেয় না। তাহলে আমরা কেন তাদের ক্ষতি বহন করব?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উত্তম পদ্ধতি হল, ভাড়া চুক্তির সময় ঐ দেড়-দু’মাস বাদ দিয়ে বছরের বাকি অংশের কথা উল্লেখ করে ভাড়া ঠিক করা। ভাড়া গ্রহীতা যদি নয়-দশ মাসের জন্যই বর্তমানে যে ভাড়া আছে তা দ্বারা ভাড়া নিতে চায় তাহলে সেটিও জায়েয হবে। বিশেষত আপনাদের অঞ্চলের ভূমিগুলো যদি সাধারণত প্রতি বছরই প্লাবিত হয় এবং একটি নির্ধারিত সময় পর্যন্ত চাষাবাদের অনুপযোগী থাকে তাহলে চুক্তির সময় উক্ত দেড়-দু’মাসের কথা উল্লেখ না করলেও উরফ তথা প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ভাড়া চুক্তি সহিহ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ঐ সময় বাদ দিয়েই জমির মালিকগণ নির্ধারিত ভাড়া নিতে পারবে। আর যদি বিষয়টি এমন হয় যে, সাধারণত পুরো বছরই জমিগুলো ফসলের উপযুক্ত থাকে, কিন্তু কখনো কখনো প্লাবনের কারণে জমিগুলো কয়েক মাস পর্যন্ত চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়ে, আর চুক্তির সময় এসব কিছু বলা ছাড়াই ভাড়া ঠিক করা হয় তাহলে সেক্ষেত্রে বছরের যে সময়টুকু জমিগুলো পানির নিচে ডুবে ছিল এবং চাষাবাদের অনুপযুক্ত ছিল সে সময়ের ভাড়া নেয়া বৈধ হবে না।
-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৬১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৫৩; আলবাহরুর রায়েক ৮/৩৬; ফাতাওয়া সিরাজিয়া পৃ. ১১৪
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র:https://www.drkhalilurrahman.com/28121/article-details.html