প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় ঘন বসতি হওয়ায় পূর্বের ছোট মসজিদে মুসল্লী সংকুলান হয় না। ফলে নামায পড়তে বেশ কষ্ট হয়। বিষয়টা নিয়ে আমাদের মাঝে আলোচনা চলছিল। একদিন আমরা কয়েকজন মিলে এলাকার সর্বজন শ্রদ্ধাভাজন বশির সাহেবের বাসায় যাই। এব্যাপারে তার সাথে আলোচনা করলে তিনি বলেন যে, আমার এ বাড়ির ৫ম তলাটি খালি পড়ে রয়েছে। চাইলে তোমরা এটাকে মসজিদ বানিয়ে ফেলতে পারো। এরপর আমরা ৫ম তলাটিকে সাফাই করে তাতে নামায পড়া শুরু করি। এক সপ্তাহ পর একজন ইমামও নিয়োগ দেওয়া হয়। এভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা সেখানে নামায পড়ে আসছি। কিন্তু কয়েকদিন আগে উনার বড় ছেলে ৫ম তলার উপর আরো দুতলা করবে বলে সেখানে নামায পড়া বন্ধ করে দেয় এবং কাজও শুরু করে দেয়। তারা বলছে, যখন এটা আমাদের প্রয়োজন ছিল না তখন তা নামায পড়ার জন্য দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমাদের প্রয়োজন পড়েছে; বরং এটা যথেষ্ট হচ্ছে না বিধায় এর উপর আরো দু’তলা করতে হচ্ছে। তাই জানতে চাচ্ছি, ৫ম তলাটি মসজিদের জন্য দিয়ে পুনরায় তা নিয়ে নেওয়া কি জায়েয হবে? এতে তাদের মসজিদ ভাঙার গুনাহ হবে না?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাড়ীর মালিক উক্ত তলাকে স্থায়ীভাবে মসজিদের জন্য দিয়ে থাকলে তা মসজিদের হুকুমে হয়ে গেছে। কেননা কোনো ভবনের নির্দিষ্ট কোনো তলা বা কোনো একটি অংশ মসজিদের জন্য দিলে তা-ও ওয়াকফ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ওয়াকফকারীর ওয়ারিসগণের জন্য তা বাতিল করা কোনোভাবেই বৈধ হবে না। বরং তাদের উচিত হবে ৫ম তলাটি মসজিদের নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া। আর ৫ম তলা মসজিদ হলেও বাড়ীর মালিকগণ এর উপরে তাদের জন্য আরো তলা নির্মাণ করতে পারবেন। তা মসজিদের হুকুমে হবে না। কিন্তু বাড়ির মালিক ৫ম তলাটি যদি শুধু অস্থায়ীভাবে নামায আদায়ের জন্য দিয়ে থাকেন, স্থায়ী মসজিদ হিসাবে না দেন তাহলে ওয়ারিসদের জন্য তা নিজ ব্যবহারে নিয়ে আসা বৈধ হবে। মুসল্লিদের জন্য এতে বাঁধ সাধা ঠিক হবে না।
-ফাতহুল কাদীর ৫/৪৪৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৮/১৬১; আলইসআফ ফী আহকামিল আওকাফ, পৃ.৭২
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র:https://www.drkhalilurrahman.com/?p=27809&preview=true