প্রশ্ন
আমি আমেরিকার একটি অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা। সেখান পুরো দুইশ কিলোমিটারের মধ্যে মাত্র একটি মসজিদ। দূর-দূরান্ত থেকে লোক এখানে নামায পড়তে আসে। রমযান মাসে কোনো হাফেয না পাওয়াতে সূরা তারাবীহ পড়তে হয়। সেখানকার কিছু মুসল্লীর পীড়াপীড়ি, উৎসাহ প্রদান ও সাহস যোগানোর কারণে আমি এ বৎসর আল্লাহর উপর ভরসা করে কুরআন হেফজ করা শুরু করেছি। আলহামদুলিল্লাহ প্রায় আঠারো পারা মুখস্থ করা শেষ হয়েছে। আমার ইচ্ছা হল, এবারের রমযানে এ আঠারো পারা দিয়ে নামায পড়াব। কিন্তু কিছু লোক আমাকে অনুরোধ করছে, অবশিষ্ট বারো পারা কুরআন শরীফ যেন দেখে পড়ে নিই। যাতে খতম পূর্ণ হয়। প্রশ্ন হল, দেখে দেখে নামাযে এভাবে কুরআন পড়া জায়েয হবে কি না? বিশেষত এক্ষেত্রে হানাফী মাযহাবের মতামত কী?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
হানাফী মাযহাবের মুফতাবিহি (যার উপর ফতওয়া প্রদান করা হয়) মত হচ্ছে, নামাযে দেখে দেখে তিলাওয়াত করলে নামায ফাসিদ হয়ে যায়। সুতরাং কুরআনের যে জায়গাগুলো আপনি হেফজ করেছেন নামাযে কেবল সেগুলো থেকেই পড়বেন। মুখস্থ অংশগুলো একবার পড়ে ফেললে অবশিষ্ট দিনগুলোতে সেখান থেকেই আবার পড়ে নেবেন। দেখে দেখে কুরআন পড়া ঠিক হবে না।
উল্লেখ্য, হানাফী মাযহাবের বিশিষ্ট ফকীহদ্বয়-ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহ.) যদিও দেখে কুরআন পড়লে নামায ফাসেদ হবে না- বলেন তবে তাদের মতেও এমনটি করা মাকরূহ। তাই এ থেকে বেঁচে থাকা দরকার।
-কিতাবুল আছল ১/১৭৭; আলমাবসূত, সারাখসী ১/২০১; ফাতহুল কাদীর ১/৩৫১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৫৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫৪৩; আলবাহরুর রায়েক২/১০; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৪১৮; রদ্দুল মুহতার ১/৬২৩
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র:https://www.drkhalilurrahman.com/?p=27650&preview=true