প্রশ্ন
আমাদের বাড়ির পাশে একটি বিল আছে। সেখানে এলাকার অধিকাংশ মানুষের জমি আছে। বিলের পাশে নদীও আছে। ফলে বর্ষার মৌসুমে পানির সাথে নদী থেকে বিলে প্রচুর মাছ আসে। তো আমরা জমিগুলো মাছ ধরার জন্য জেলেকে ভাড়া দিয়ে থাকি। আমাদের ভাড়া দেওয়ার পদ্ধতি হলো, নিলামের মাধ্যমে কোনো একজনকে জমিগুলো শুধু বর্ষার মৌসুমের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়, যেন সে সেখানকার মাছগুলো ধরে নিতে পারে। ভাড়া নেওয়ার পর ঐ ব্যক্তি নির্ধারিত এলাকায় বিভিন্ন ধরণের খাবার ছিটিয়ে দেয়, যেন মাছগুলো ঐ জায়গায় গিয়ে জমা হয়। এরপর সে নির্ধারিত জায়গার চারপাশে বাঁশ দিয়ে ঘেরাও করে দেয়। ঐ নির্ধারিত জায়গা থেকে অন্য কারোর জন্য মাছ ধরা নিষেধ থাকে।
এখন আমাদের জানার বিষয় হল, উল্লিখিত পদ্ধতিতে চুক্তি করা কি আমাদের জন্য জায়েয হচ্ছে? যদি এখানে শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো সমস্যা থাকে তাহলে এক্ষেত্রে শরীয়তসম্মত সঠিক পদ্ধতি কী হবে? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
শুধু মাছ শিকার করার জন্য পুকুর বা জলাশয় ভাড়া দেওয়া জায়েয নেই। তবে মাছ চাষ করার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিল বা জলাশয় ভাড়া দেওয়া-নেওয়ার বিধান শরীয়তে আছে। তাই এক্ষেত্রে বৈধভাবে চুক্তি করতে চাইলে শুরু থেকেই নির্ধারিত মেয়াদের জন্য ভাড়া গ্রহীতাকে মাছ চাষের জন্য পুকুর ভাড়া নিতে হবে। এরপর সে তাতে মাছ ছাড়া বা বর্ষার মাছ প্রবেশ করা, মাছ আটকানো এবং মাছের চাষ ও পরিচর্যার জন্য যা যা করা দরকার এর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এভাবে ভাড়া নেওয়ার পর ঘেরাও দেওয়া মাছ পরিচর্যা ও খাবার দিয়ে চাষাবাদ করা যাবে। চাষাবাদের জন্য নতুন মাছ ছাড়া জরুরি নয়।
প্রকাশ থাকে যে, এভাবে ভাড়া নেওয়ার পর নির্ধারিত জায়গার চারপাশে ঘেরাও দিলে সেখানে থাকা মাছগুলো শিকার করার ব্যাপারে তার হক সাব্যস্ত হবে। এক্ষেত্রে উক্ত জায়গা থেকে অন্যের জন্য মাছ ধরা জায়েয হবে না।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৭; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৬১, ৬০ ও ৬/৬৩; আলবাহরুর রায়েক ৬/৭৩; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৫/৪৭; ফাতহুল কাদীর ৬/৪৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/৩২৯; রদ্দুল মুহতার ৫/৬০; তাকরীরাতে রাফেয়ী ৫/১৩৯
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র:https://www.drkhalilurrahman.com/?p=26499&preview=true