প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,আমার জানার বিষয় হলো, আমাদের দেশ কোনো স্বামী মারা গেলে তাকে সাদা কাপড় পরিধান করতে বলা হয় । এ ব্যাপারে কুরআন-হাদিসের বিধান কি? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
আমাদের সমাজে কোনো মহিলার স্বামী মারা গেলে তার জন্য সাদা কাপড় পরিধান করার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, এটা সুস্পষ্ট একটি কুসংস্কার, এর সাথে কুরআন-হাদিসের কোনো সম্পর্ক নেই।
মহিলাদের জন্য সবসময় সকল প্রকার রং এর কাপড় পরিধান করার অনুমতি রয়েছে। সেই হিসেবে কোনরূপ বাধ্যবাধকতা ছাড়াই স্বামী মারা গেলে স্বাভাবিকভাবে উক্ত মহিলার সাদা কাপড় পরিধানে সমস্যা নেই। তবে নিয়ম করে কিংবা স্বামী মারা গেলে সাদা কাপড় পরিধানের বিশ্বাস করতঃ সাদা পড়া জায়েয হবেনা, এটা বিদআত।
তবে স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর ইদ্দতকালীন সময় স্ত্রীর করণীয় সম্পর্কে হাদিসে যা এসেছে তা এই-
১- উম্মে হাবীবা (রা.) থেকে বর্ণিত,
سمعت رسول الله ﷺ يقول : لا يحل لامرأة تؤمن بالله واليوم الآخر أن تحد على ميت فوق ثلاث إلا على زوج فإنها تحد عليه أربعة أشهر وعشرا
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী কোনো নারীর জন্য তার স্বামী ব্যতীত অন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশি সময় হিদাদ (শোক করা ও সাজসজ্জা থেকে বিরত থাকা) বৈধ নয়। আর স্বামীর মৃত্যুতে ৪ মাস ১০ দিন হিদাদ পালন করবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫১২৮)
২- উম্মে সালামা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
عن النبي ﷺ أنه قال ” المتوفى عنها زوجها لا تلبس المعصفر من الثياب ولا الممشقة ولا الحلي ولا تختضب ولا تكتحل
নবী কারীম (সা.) বলেছেন, যে স্ত্রী লোকের স্বামী মৃত্যুবরণ করে সে যেন ইদ্দতকালীন সময়ে রঙিন এবং কারুকার্যমণ্ডিত কাপড় ও অলংকার পরিধান না করে। আর সে যেন খিযাব ও সুরমা ব্যবহার না করে। ( সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২২৯৮)
আল্লামা কুরতুবী (রাহ.) তার বিখ্যাত তাফসিরগ্রন্থ ‘আলজামে লিআহকামিল কুরআন’ও ইদ্দত সংক্রান্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় লেখেন,
الإحداد : ترك المرأة الزينة كلها من اللباس والطيب والحلي والكحل والخضاب بالحناء ما دامت في عدتها
হিদাদ পালনের অর্থ হল, মহিলা তার ইদ্দতকালীন সুগন্ধি, সুরমা, মেহেদি, অলঙ্কারাদিসহ পোশাক-আশাকের ক্ষেত্রে যাবতীয় সাজসজ্জা ত্যাগ করবে। (তাফসিরে কুরতুবী ৩/১৭৯)
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র:https://www.drkhalilurrahman.com/?p=26184&preview=true