প্রশ্ন
আমার এক ছাত্রের সাথে কথা বলে আমার প্রবল ধারণ হয়েছিলো, সে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত। ফলে আমি তাকে আমার যাকাতের থেকে কিছু টাকা দেই। কিন্তু পরবর্তীতে জানতে পারলাম, সে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত নয়। জানতে চাই, আমার কি নতুন করে যাকাত আদায় করতে হবে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
আপনার প্রবল ধারণা অনুযায়ী সে যেহেতু যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ছিলো এবং সে হিসেবেই আপনি তাকে যাকাত প্রদান করেছিলেন সেহেতু আপনার যাকাত আদায় হয়ে গেছে। আপনার আর পুনরায় যাকাত আদায় করতে হবে না।
তবে ভবিষ্যতে যাকাত আদায় করার ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
হাদিস শরিফে এসছে, হযরত আবু হুরায়রা (রা.)থেকে বর্ণিত, রাসূল (স.) বলেন,
‘এক ব্যক্তি মনে মনে বলল, আমি আজ (রাতে গোপনে) সদকা করব। সুতরাং সদকার মাল নিয়ে বের হল এবং অজ্ঞাতসারে এক চোরের হাতে দিয়ে দিলো। সকালে লোকজনের মধ্যে আলোচনা হলো যে,রাত্রে চোরকে সদকা দেয়া হয়েছে। সদকা দানকারী বলল,হে আল্লাহ! চোরকে সদকা দেয়ার মধ্যেও আপনার প্রশংসা। কেননা তার থেকেও আরও খারাপ ব্যক্তিকে যদি দেয়া হত আমি কী করতে পারতাম? অতপর সে দৃঢ়সংকল্প করল যে,আজ রাত্রেও অবশ্যই আমি সদকা করবো। দ্বিতীয় রাত্রে আবার সদকার মাল নিয়ে বের হল,এবং অজ্ঞাতসারে এক ব্যভিচারিণী মেয়েলোককে সদকা দিয়ে দিলো। সকালে আলোচনা হলো রাত্রে এক ব্যভিচারিণী মেয়েলোককে সদকা দেয়া হয়েছে। সে বলল,হে আল্লাহ ব্যভিচিরিণী মেয়েলোককে সদকা দেয়ার মধ্যেও আপনার প্রশংসা। তৃতীয়বার সদকা করার ইচ্ছা করল যে,আজ রাত্রে অবশ্যই সদকা করবো। অতপর রাত্রে সদকার মাল নিয়ে বের হল। তৃতীয় রাত্রে সদকার মাল নিয়ে বের হয়ে এক ধনী ব্যক্তিকে দিয়ে দিলো।সকালে আলোচনা হল রাত্রে এক ধনী ব্যক্তিকে সদকা দেয়া হয়েছে। সদকা দানকারী বলল, হে আল্লাহ! ধনী ব্যক্তিকে সদকা দেয়ার মধ্যেও আপনার প্রশংসা। অতপর তাকে স্বপ্নে বলে দেয়া হল যে, (তোমার সদকা কবুল হয়েছে)। তোমার সদকা চোরের উপর এজন্য করানো হয়েছে যে,হতে পারে যে, সে চুরির অভ্যাস হতে তওবা করে নিবে। ব্যভিচারিণী মেয়েলোকের উপর এজন্য যে,হতে পারে সে ব্যভিচার হতে তওবা করে নিবে। আর ধনী ব্যক্তির উপর এজন্য, যাতে সে শিক্ষা লাভ করে, হতে পারে সেও ঐসমস্ত মাল হতে যা আল্লাহ তায়ালা তাকে দান করেছেন তা আল্লাহর পথে খরচ করতে আরম্ভ করবে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৪২১]
আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮৯-১৯০; হিদায়া (ফাতহুল কাদীর) ২/২১৪-২১৫; হাশিয়া তহতাবী আলালমারাকী পৃ. ৩৯৩
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/1843/article-details.html