প্রশ্ন
জনৈক ব্যক্তি আমার বাবার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছে। তিন বছর পর সে উক্ত টাকা ফেরত দেয়। এই তিন বছরের যাকাত সেই আদায় করেছে। জানতে চাচ্ছি, উক্ত টাকার এই তিন বছরের যাকাত কি আমার বাবার পক্ষ থেকে আদায় হয়েছে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
যিনি সম্পদের মালিক তাকেই যাকাত দিতে হয়। হাদিস শরিফে এসেছে-
عن أبي هُريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: “مَنْ آتَاهُ اللهُ مَالا فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهُ مُثِّلَ له شُجَاعًا أقرعَ له زبيبتان، يُطَوّقُه يوم القيامة، يأخذ بلِهْزِمَتَيْه -يعني بشدقَيْه-يقول: أنا مَالُكَ، أنا كَنزكَ” ثم تلا هذه الآية: { وَلا يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ بِمَا آتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ هُوَ خَيْرًا لَهُمْ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَهُمْ } إلى آخر الآية
‘আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন: যাকে আল্লাহ তাআলা সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু সে সম্পদের যাকাত আদায় করেনি কিয়ামাতের দিন তার সম্পদকে বিষধর স্বর্পরূপে উপস্থিত করা হবে এবং তা তার গলায় পেঁচিয়ে দেওয়া হবে। সাপটি তার অধরপ্রান্তে দংশন করবে এবং বলবে: আমিই তোমার মাল। আমিই তোমার পুঞ্জিভূত সম্পদ। অতঃপর তিনি এই আয়াত তিলাওয়াত করেন-
وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ بِمَا آتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ هُوَ خَيْرًا لَهُمْ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَهُمْ سَيُطَوَّقُونَ مَا بَخِلُوا بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلِلَّهِ مِيرَاثُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
‘আর আাল্লাহ নিজ অনুগ্রহে যা দিয়েছেন তাতে যারা কৃপণতা করে তারা যেন কিছুতেই মনে না করে যে, এটা তাদের জন্য মঙ্গল। না, এটা তাদের জন্য অমঙ্গল। সে সম্পদে তারা কৃপণতা করেছে কিয়ামাতের দিন তা-ই তাদের গলার বেড়ি হবে। আসমান ও যমীনের স্বত্বাধিকার একমাত্র আল্লাহরই। তোমরা যা কর আল্লাহ তা সবিশেষ অবগত।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৪০৩]
যেহেতু উক্ত টাকার মালিক আপনার বাবা তাই তার যাকাতও আপনার বাবাকে দিতে হবে। ঋণগ্রহীতার যাকাতা দেওয়াটা গ্রহণযোগ্য হবে না। তাছাড়া তিনি আপনার বাবাকে না জানিয়ে দেওয়া তা আপনার বাবার পক্ষ থেকেও ধরা যাবে না।
সুতরাং আপনার বাবাকে তিন বছরের যাকাত হিসাব করে দিয়ে দিতে হবে। আর উক্ত ব্যক্তি যে টাকা দিয়েছে তা তার পক্ষ থেকে দান হিসাবে গণ্য হবে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/25424/article-details.html