প্রশ্ন
আশুরার দিন আমি রোযা পালন করছিলাম। মাঝে আমার বড় ভাই আমাকে দুপুরের খাবারের দাওয়াত দিলে তার অনুরোধে আমি রোজা ভেঙ্গে ফেলি। আমার উক্ত কাজটি কি শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ হয়েছে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
জি, উক্ত ক্ষেত্রে আপনার রোজা ভঙ্গ করা শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ হয়েছে। কেননা আশুরার রোজা নফল রোজার অন্তর্ভুক্ত। দাওয়াতের নিমন্ত্রণের ক্ষেত্রে নফল রোজাদার সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছাধীন। সে চাইলে রোযা ভাঙ্গতেও পারে কিংবা রোযা অব্যাহত রেখে নিমন্ত্রণকারীর জন্য দোয়াও করতে পারে।
উম্মে হানি (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে,
‘একদিন রাসূলুল্লাল্লাহ (সা.) তার ঘরে প্রবেশ করে পানি চাইলেন। তখন রাসূল (সা.) নিজে পানি পান করলেন এবং উম্মে হানি (রা.)কেও পানি দিলেন। তখন উম্মে হানি (রা.) পানি পান করেন। এরপর বললেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি তো রোযাদার ছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বললেন: নফল রোযাদার নিজেই নিজের কর্তা। ইচ্ছা করলে সে রোযা সমাপ্ত করতে পারে; আবার ইচ্ছা করলে রোযা ভেঙ্গে ফেলতে পারে।’
[আলবানী ‘সহিহুল জামে’ গ্রন্থে (৩৮৫৪) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
উম্মুল মুমেনীন আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন:
‘একদিন নবী (সা.) আমার কাছে (ফজরের পর থেকে দীর্ঘ বেলা পর্যন্ত দাওয়া কাজ সেরে) সে বললেন: তোমাদের কাছে কোনো কিছু আছে? আমরা বললাম: না। তখন তিনি বললেন: তাহলে আমি রোযাদার। এরপর অন্য একদিন আসলেন। আমরা বললাম: ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাদের কাছে ‘হাইস’ (খেজুরের সাথে ঘি ও পনিরের মিশ্রনে তৈরী খাবার) হাদিয়া পাঠানো হয়েছে। তখন তিনি বললেন: আমাকে দেখাও তো; আমি তো রোযা অবস্থায় দিন শুরু করেছি। অতপর তিনি তা খেয়েছেন।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১১৫৪)]
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন: ‘যখন তোমাদের কাউকে নিমন্ত্রণ করা হয় তখন নিমন্ত্রণে হাজির হও। যদি কেউ রোযাদার হয় তাহলে সে নিমন্ত্রণকারীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। আর যদি রোযাদার না হয় তাহলে খাবার গ্রহণ করবে।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৪৩১]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/1484/article-details.html