প্রশ্ন
অযুতে চামড়ার মোজার উপর কি মাসাহ করা যায়? করা গেলে তার শর্ত সহ পূর্ণ নিয়ম জানতে চাচ্ছি।
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
হ্যাঁ, অজুতে চামড়ার মোজার উপর মাসাহ করা জায়েয।
হযরত মুগীরা ইবনে শো’বা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ سَفَرٍ فَأَهْوَيْتُ لِأَنْزِعَ خُفَّيْهِ فَقَالَ: ( دَعْهُمَا, فَإِنِّيْ أدْخَلْتُهُمَا طَاهِرَتَيْنِ) فَمَسَحَ عَلَيْهِماَ
অর্থ: ‘আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সাথে কোনো এক সফরে ছিলাম। তিনি অজু করলেন। পা ধোয়ার পূর্বে আমি তাঁর মোজাদ্বয় খোলার ইচ্ছা করলাম। তিনি বললেন: মোজা খোলার দরকার নেই। কেননা পবিত্রাবস্থায় আমি উহা পরিধান করেছি। অতপর তিনি স্বীয় মোজার উপর মাসেহ করলেন।’ [বুখারি ও মুসলিম]
চামড়ার মোজার উপর মাসাহ করার জন্য চারটি শর্ত রয়েছে:
প্রথম শর্ত: পবিত্র অবস্থায় মোজাদ্বয় পরিধান করা।
দ্বিতীয় শর্ত: মোজাদ্বয় পবিত্র হওয়া। নাপাক মোজার উপর মাসাহ করা জায়েয নেই।
তৃতীয় শর্ত: ছোট অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জন করার জন্য মাসাহ করা। জানাবাত বা যে কারণে গোসল ফরয হয় এমন বড় অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জনের ক্ষেত্রে মাসাহ করা যাবে না।
চতুর্থ শর্ত: শরিয়ত নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে মাসাহ করতে হবে। তা হল মুকীমের জন্য একদিন এক রাত এবং মুসাফিরের জন্য তিনদিন তিনরাত।
সহীহ বুখারী ২০৬,মুসলিম ২৩২, ফাতহুল বারী ১/৩৭০, আল-মুয়াত্তা ১/৪৬, আল-উম্ম ১/৩৩, আল-মুগনী ১/২৮২, মাজমূ’ আল-ফাতাওয়া
আরেকটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষণীয়: চামড়ার মোজা কিংবা সূতির মোজা যাতে চামড়া দেখা যায় না, উভয় মোজার উপরই মাসাহ করার অনুমতি আছে। হাদিস শরিফে আছে-
تَوَضَّأَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَسَحَ عَلَى الْجَوْرَبَيْنِ وَالنَّعْلَيْنِ
অর্থ: ‘নবী (সা.) অজু করলেন এবং মোজা ও জুতার উপর মাসাহ করলেন।’ [সুনানুত তিরমিযি, হাদিস: ৯২]
বিশ্বনবী (সা.) চামড়ার মোজা ও সূতির মোজা উভয়েরই মাসেহ করেছেন।
মাসাহ করার পদ্ধতি:
দুই হাতের ভেজা আঙ্গুলগুলো দুই পায়ের আঙ্গুলের ওপর রাখবে। এরপর হাত দুইটি পায়ের গোছার দিকে একবার টেনে আনবে। ডান পা ডান হাত দিয়ে মাসাহ করবে; বাম পা বাম হাত দিয়ে মাসাহ করবে। মাসাহ করার সময় হাতের আঙ্গুলগুলো ফাঁকা ফাঁকা করে রাখবে। মোজার নিচের অংশে মাসাহ করার প্রোয়োজন নেই। [দ‘আল-মুলাখ্খাস আল-ফিকহি ১/৪৩]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/1457/article-details.html