প্রশ্ন
মুসলামানদের জন্য ঈসা (আ.) এর উপর বা পূর্ববর্তী নবীদের উপর ঈমান আনয়ন করা কি জরূরি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
হ্যাঁ, শুধু ঈসা (আ.)-ই নয়, বরং পূর্ববর্তী প্রত্যেক নবীর উপর ঈমান আনা জরুরী, ঠিক যেমন আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর উপর ঈমান আনা জরুরি। এটি দ্বীনের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুকন। পূর্ববর্তী নবীদের যে কোনো একজনকে অস্বীকার করা প্রকারান্তরে সকল নবীকে অস্বীকার করার শামিল। কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন জায়গায় এ ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পবিত্র কুরআনে উল্লেখ আছে,
كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهِ
অর্থ: ‘প্রত্যেকেই ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশতাদের প্রতি এবং তার কিতাবসমূহের প্রতি। আমরা আল্লাহর রাসূলদের থেকে কারো মাঝে কোনো পার্থক্য করি না।’ [সূরা বাকারা, আয়াত: ২৮৫]
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي نَزَّلَ عَلَى رَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي أَنْزَلَ مِنْ قَبْلُ وَمَنْ يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا (النساء:136)
অর্থ: ‘হে ঈমানদারগণ তোমরা ঈমান আনয়ন কর আল্লাহর প্রতি,তাঁর রাসূল (সা. ) এর প্রতি,ঐ কিতাবের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাঁর রাসূল ( সা.) এর উপর এবং ঐ কিতাবসমূহের প্রতি যা তিনি তাঁর পূর্বে নাযিল করেছেন। আর যে ব্যক্তি অস্বীকার করবে আল্লাহকে, তাঁর ফিরিস্তাদেরকে, তাঁর কিতাবসমূহকে, তাঁর রাসূলগণকে এবং শেষ দিবসকে তারা অবশ্যই চরমপর্যায়ে বিভ্রান্ত।’ [সূরাআন-নিসা, আয়াত: ১৩৬]
অন্য একটি আয়াতে আল্লাহ বলেন:
قُولُوا آمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا وَمَا أُنْزِلَ إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ وَالْأَسْبَاطِ وَمَا أُوتِيَ مُوسَى وَعِيسَى وَمَا أُوتِيَ النَّبِيُّونَ مِنْ رَبِّهِمْ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ
অর্থ: ‘তোমরা বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপরএবং যা নাযিল হয়েছে আমাদের প্রতি, ইবরাহীম, ঈসমাইল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তাঁর বংশধরদের প্রতি, তার উপর। এবং যা তাঁদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে মূসা,ঈসা ও অন্যান্য নবীকে তার প্রতি। আমরা তাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করিনা।’ [সূরা বাকারা, আয়াত: ১৩৬]
হাদিস শরিফে এসেছে,
عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه ، ومما جاء فيه : قَالَ : فَأَخْبِرْنِي عَنْ الْإِيمَانِ ؟ قَالَ : أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ ، وَمَلَائِكَتِهِ ، وَكُتُبِهِ ، وَرُسُلِهِ ، وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ، وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ
অর্থ: ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত (এবং এটা হযরত জীবরিল (আ.) ও নবী (সা.) এর মাঝে কথোপোকথন মূলক) তিনি ( জীবরিল আ.) বললেন: আমাকে ঈমান সম্পর্কে অবহিত করুন। তখন তিনি বললেন:আল্লাহর প্রতি,তাঁর ফেরেস্তাদের প্রতি,তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি,তাঁর রাসূলগণের প্রতি এবং শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনয়ন করা। আর ঈমান আনয়ন করা তাকদীরের ভাল মন্দের প্রতি। [মুসলিম শরিফ, হাদিস: ১০২]
উপরোক্ত আয়াত এবং হাদিসের আলোকে এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, আমাদেরকে শেষ নবী মুহাম্মাদ (স.) এর সাথে সাথে পূর্ববর্তী সকল নবীদের উপর ঈমান আনতে হবে।
আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক জ্ঞান দান করুক। আমিন।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: http://www.drkhalilurrahman.com/1167/article-details.html