প্রশ্ন
রাসূল (সা.) যখন কোনো সেনাদল প্রেরণ করতেন তখন তার সেনাপ্রধানকে কী কী অসিয়ত করতেন বা উপদেশ দিতেন?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ইসলাম শান্তির ধর্ম। কোনো মুসলমানের পক্ষ থেকে যেন কখনো কোনো জুলুম প্রকাশ না পায় সেজন্য রাসূল (সা.) যখনই কোনো সেনাদল প্রেরণ করতেন তখন তার সেনাপ্রধানকে বিশেষ কিছু ওসিয়ত করতেন। হাদিসের কিতাবসমূহে এর বিস্তারিত বিবরণ এসেছে। যেমন,
হাদিস শরিফে এসেছে,
‘হযরত সুলায়মান বিন বুরায়দা (রা.) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন কোন বড় কিংবা ছোট সেনাদলের উপর কাউকে আমীর নিযুক্ত করতেন, তখন তাকে বিশেষভাবে আল্লাহকে ভয় করে চলার এবং তার সঙ্গী মুসলমানদের সাথে উত্তম ব্যবহার করার উপদেশ দিতেন। অতঃপর বলতেন, আল্লাহর নামে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধে গমন কর এবং যারা আল্লাহর সাথে কুফরী করে তাদের সাথে যুদ্ধ কর। সাবধান! জিহাদ কর, কিন্তু গণীমতের মালে খেয়ানত কর না, চুক্তি ভঙ্গ কর না, নিহতদের অঙ্গহানি কর না, কোন শিশুকে হত্যা কর না। কাফেরদের মুকাবিলায় তুমি তাদেরকে তিনটি কথার প্রতি আহবান জানাবে। যদি তারা সেগুলি মেনে নেয়, তাহলে তাদের প্রতি আক্রমণ করা থেকে বিরত হবে। (১) তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিবে। (২) যদি তারা ইসলাম কবুল করে, তাহলে তারা তাদের নিজ এলাকা থেকে মুসলমানদের এলাকায় হিজরত করে চলে আসবে এবং তারা মুহাজিরগণের ন্যায় (গণীমত ইত্যাদির) অধিকার প্রাপ্ত হবে। (৩) ইসলাম কবুলের পরেও যদি তারা হিজরত করে আসতে রাযী না হয়, তাহলে তারা বেদুঈন মুসলমানদের মত সেখানে থাকবে এবং আল্লাহর বিধানসমূহ পালন করবে।
পক্ষান্তরে যদি তারা ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকার করে, তাহলে তাদের নিকট থেকে জিযিয়া দাবী কর এবং তাদের প্রতি আক্রমণ করা হতে বিরত থাক। যদি তারা জিযিয়া দিতে অস্বীকার করে, তাহলে আল্লাহর প্রতি ভরসা কর এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর। আর যদি তুমি কোনো দুর্গ অবরোধ কর, আর তারা তোমাদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হতে চায়, তাহলে তোমরা নিজ দায়িত্বে তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে পার। এ সময় আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নামে চুক্তি করো না। কেননা (যদি কোন কারণে উক্ত চুক্তি ভঙ্গ করতে বাধ্য হও, তখন) আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নামে কৃত চুক্তি ভঙ্গ করা অপেক্ষা তোমাদের কৃত চুক্তি ভঙ্গ করা অধিকতর সহজ।’[সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৭৩১]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র:https://www.drkhalilurrahman.com/17597/article-details.html