প্রশ্ন
কিছুদিন আগে জনৈক ব্যক্তি ফেসবুক লাইভে এসে কালিমা পাঠ করে আত্মহত্যা করেন। জানতে চাচ্ছি, আত্মহত্যার আগে কালিমা পাঠের কারণে কি সে জান্নাতে যেতে পারবে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
আত্মহত্যা হারাম ও কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। হাদিস শরিফে এসেছে,
‘আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর সঙ্গে এক যুদ্ধে উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি ইসলামের দাবীদার এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বললেন, এ ব্যক্তি জাহান্নামী অথচ যখন যুদ্ধ শুরু হল, তখন সে লোকটি ভীষণ যুদ্ধ করল এবং আহত হল। তখন বলা হল, হে আল্লাহর রাসূল! যে লোকটি সম্পর্কে আপনি বলেছিলেন সে লোকটি জাহান্নামী, আজ সে ভীষণ যুদ্ধ করেছে এবং মারা গেছে। রাসূল (সা.) বললেন, সে জাহান্নামে গেছে। রাবী বলেন, একথার উপর কারো কারো অন্তরে এ বিষয়ে সন্দেহ সৃষ্টির উপক্রম হয় এবং তাঁরা এ সম্পর্কিত কথাবার্তায় রয়েছেন, এ সময় খবর এল যে, লোকটি মরে যায়নি বরং মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। যখন রাত্রি হল, সে আঘাতের কষ্টে ধৈর্যধারণ করতে পারল না এবং আত্মহত্যা করল। তখন রাসূল (সা.)-এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছানো হল, তিনি বলে উঠলেন, আল্লাহু আকবার! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি অবশ্যই আল্লাহ তাআলার বান্দা এবং তাঁর রাসুল। অতঃপর রাসূল (সা.) বিলাল (রা.)-কে আদেশ করলেন, তখন তিনি লোকদের মধ্যে ঘোষণা দিলেন যে, মুসলিম ব্যতীত কেউ বেহেশতে প্রবেশ করবে না। আর আল্লাহ তাআলা (কখনো কখনো) এই দ্বীনকে মন্দ লোকের দ্বারাও সাহায্য করেন।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩০৬২; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১১]
কালিমা পাঠ করলেই কোনো হারাম কাজ হালাল হয়ে যায় না, যেমন কেউ যদি বিসমিল্লাহ বলে মদ পান করে তাহলে তা হালাল হয়ে যায় না।
কাজেই কালিমা পাঠ করে আত্মহত্যা করলেও হাদিসের ভাষ্যমতে তিনি জাহান্নামী হবেন।
তবে তার অন্তরে যদি বিন্দু পরিমাণ ঈমান থাকে তাহলে আশা করা যায় যে, শাস্তি ভোগ করে কোনো এক সময় জান্নাতে প্রবেশ করবেন। কারণ, হাদিস শরিফে এসেছে,
‘আনাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে আর তার অন্তরে একটি যব পরিমাণও পুণ্য বিদ্যমান থাকবে, তাকে জাহান্নাম হতে বের করা হবে এবং যে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ বলবে আর তার অন্তরে একটি গম পরিমাণও পুণ্য বিদ্যমান থাকবে তাকে জাহান্নাম হতে বের করা হবে এবং যে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ বলবে আর তার অন্তরে একটি অণু পরিমাণও নেকী থাকবে তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৪]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/15223/article-details.html