প্রশ্ন
কিছুদিন আগে এক ব্যক্তিকে বলতে শুনলাম, স্ত্রীর দুধ যদি স্বামী পান করে ফেলে তাহলে স্ত্রী চিরদিনের জন্য হারাম হয়ে যাবে। জানতে চাচ্ছি, উক্ত ব্যক্তির কথা কতটুকু সঠিক?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
স্ত্রীর স্তন চোষার সময় দুধ মুখে চলে গেলে বিয়ের কোনো ক্ষতি হয় না। কারণ, দুধ পানের দ্বারা বৈবাহিক সম্পর্ক নিষিদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হলো, তা দুধ পানের বয়সকালের মধ্যে হতে হবে। আর দুধ পানের বয়সকাল হলো দুই বছর। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
وَالْوَالِدَاتُ يُرْضِعْنَ أَوْلَادَهُنَّ حَوْلَيْنِ كَامِلَيْنِ لِمَنْ أَرَادَ أَنْ يُتِمَّ الرَّضَاعَةَ
‘আর সন্তানবর্তী নারীরা তাদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দু’বছর দুধ খাওয়াবে, যদি দুধ খাওয়াবার পূর্ণ মেয়াদ সমাপ্ত করতে চায়।’ [সূরা বাকারা, আয়াত: ২৩৩]
হাদিস শরিফে এসেছে,
‘আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন একদা এক আনসারী ব্যক্তি তার বাদীকে বিবাহ করার ইচ্ছে পোষন করলেন, তখন ঐ আনসারীর স্ত্রী ঐ বাদীটিকে তার দুধ পান করিয়ে দেন (যাতে করে তার স্বামী বিবাহ করতে না পারে) যখন আনসারী ঘরে ফিরে আসলো তখন তার স্ত্রী বললো এই বাদী তোমার মেয়ে হয়ে গিয়েছে, কেননা আমি তাকে আমার দুধ পান করিয়ে দিয়েছি। অতপর ঐ আনসারী হযরত উমর (রা.) এর কাছে গিয়ে উক্ত ঘটনার বর্ণনা দেন, তখন হযরত ওমর (রা.) দৃঢ়তার সাথে বলেন, তুমি ফিরে যাও তোমার বাদী পূর্বের ন্যায় তোমার বাদী হিসেবেই আছে (তোমার মেয়ে হয়নি অর্থাৎ তুমি তাকে বিবাহ করতে পারবে) আর তোমার স্ত্রীর কথা প্রত্যাখ্যাত। অন্য বর্ণনায় আছে শিশু বয়সে দুধ পান করানো দ্বারা শুধু বিবাহ বন্ধন নিষিদ্ধ হয়।’ [আস সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী ৭/৭৬০]
তবে স্ত্রীর দুধ পান করে ফেলা মাকরূহ। উক্ত কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
সুতরাং, উক্ত ব্যক্তির বক্তব্য সঠিক নয়। দুধ মুখে চলে গেলেও বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না।
আদদুররুল মুখতার ৪/৩৯৭
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/14934/article-details.html