প্রশ্ন
বর্তমানে কেউ কেউ গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে জিহাদ বলে থাকে। জানতে চাচ্ছি, এভাবে নির্বাচনকে জিহাদ বলা কতটুকু শরিয়ত সম্মত?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
জিহাদ শব্দটির একটি সাধারণ অর্থ এবং একটি পারিভাষিক অর্থ রয়েছে। জিহাদের সাধারণ অর্থ হলো, আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে শরিয়তের শিক্ষা ও নির্দেশনা অনুযায়ী ইসলামের কালিমা বুলন্দ করার জন্য যে ত্যাগ-তিতিক্ষা, কষ্ট-ক্লেশ সহ্য করা হয় তাই জিহাদ, তা যে কোনো পথেই হোক বা যে কোনো পন্থায়ই হোক।
কিন্তু জিহাদ যা শরিয়তের একটি বিশেষ পরিভাষা, তার অর্থ হলো আল্লাহর কালিমা বুলন্দ করা, ইসলাম ও মুসলমানকে রক্ষা করা, মুসলমানদের শক্তি বৃদ্ধি করা ও কাফের মুশরিকদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্বকে চূর্ণ করার জন্য আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কাফের মুশরিকদের সাথে সশস্ত্র লড়াই করা।
শরিয়তে জিহাদ বলে সাধারণত এ প্রকার জিহাদকেই উদ্দেশ্য নেওয়া হয়। এবং এটাই জিহাদের প্রসিদ্ধ অর্থ।
কাজেই গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে জিহাদ হিসেবে আখ্যায়িত করা শরিয়ত সম্মত নয়। তাছাড়া গণতন্ত্র ইসলাম সমর্থন করে না। গণতন্ত্রের মূলমন্ত্রই হল, ‘সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ’ যা স্পষ্ট ইসলামি আকিদা বিরোধী। কারণ, সকল ক্ষমতার উৎস একমাত্র আল্লাহ তাআলা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,
إِنِ الْحُكْمُ إِلاَّ لِلّهِ
‘কর্তৃত্বতো আল্লাহরই।’ [সূরা আনআম, আয়াত: ৫৭]
তবে বর্তমানে এই পদ্ধতি যেহেতু সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে আর একদিনেই যেহেতু এই পদ্ধতির পরিবর্তন সম্ভব না আবার ইসলাম বিদ্বেষী কোনো লোক যদি ক্ষমতায় চলে আসে তাহলে ইসলাম ও মুসলমানের বিপুল ক্ষতি হওয়ার প্রবল আশংকা রয়েছে। এক্ষেত্রে ইসলাম ও মুসলমানের কল্যাণে কাজ করাটাই হবে ঈমানের দাবী। এ কারণে উলামায়ে কেরাম এ পদ্ধতিকে সাময়িক বৈধ বললেও একে জিহাদ হিসেবে আখ্যায়িত করা চরম পর্যায়ের বাড়াবাড়ি হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে সঠিক বুঝ দান করুন।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/14569/article-details.html