প্রশ্ন
কেউ যদি ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ছেড়ে দেয় তাহলে সে কি কাফের হয়ে যাবে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ছেড়ে দেয় তার দু’টি অবস্থা হতে পারে। ১. হয়ত যে নামাজ ফরজ হওয়াকেই অস্বীকার করে। যে কারণে সে নামাজ পড়ে না। সকল উলামায়ে কেরাম এমন ব্যক্তিকে কাফের বলেন। কারণ, সে নামাজের ফরজিয়তকে অস্বীকার করেছে।
২. অথবা সে নামাজের ফরজ হওয়াকে অস্বীকার করে না। তবে অলসতাবশত নামাজ পড়ে না। এমন ব্যক্তির ব্যাপারে উলামায়ে কেরামের মতভেদ রয়েছে।
একদল উলামায়ে কেরামের মতে এমন ব্যক্তিও কাফের। তাদের দলিল হল, হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
‘কোনো ব্যক্তির মাঝে এবং শিরক ও কুফরের মাঝে পার্থক্য হলো নামাজ ত্যাগ করা।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৩৪]
তবে অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের বক্তব্য হল, এমন ব্যক্তি কাফের হবে না। তাকে ফাসেক বলা হবে। তাদের দলিল হল, হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
‘আল্লাহ তাআলা তো এমন ব্যক্তির প্রতি জাহান্নাম হারাম করে দিয়েছেন, যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ বলে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪২৫]
উক্ত হাদিসে বলা হয়েছে, শুধু লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বললেই মানুষ কোনো এক সময় জান্নাতে যেতে পারবে। নামাজের কথা এই হাদিসে বলা হয়নি। সুতরাং নামাজ না পড়লে যদি ব্যক্তি কাফেরই হয়ে যায় তাহলে সে তো জান্নাতে যেতে পারত না।
আরেক হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন,
‘আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি তা যথাযথভাবে পালন করবে, আর অবহেলাহেতু এর কোনোটি পরিত্যাগ করবে না, মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর অঙ্গীকার করেছেন। আর যে ব্যক্তি তা (যথাযথভাবে) আদায় করবে না, তার জন্য আল্লাহর কাছে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দিবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১৪২০]
এই হাদিস থেকেও বুঝা যাচ্ছে, নামাজ না পড়লে ব্যক্তি কাফের হবে না। যদি কাফের হয়ে যেত তাহলে নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ তাআলা তাকে জাহান্নামে পাঠাবেন। জান্নাতে যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। অথচ হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা ইচ্ছা করলে তাকে জাহান্নামে দিবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
সুতরাং নামাজ অস্বীকারকারী নয় এমন ব্যক্তি নামাজ না পড়লে কাফের হবে না।
আল মুগনী ২/৩৩২
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/14396/article-details.html