প্রশ্ন
আমার দাদিকে বলতে শুনেছি, কেউ ভাত নষ্ট করলে একেকটি ভাত কিয়ামতের দিন পাহাড়ের সমান বড় হয়ে যাবে। তারপর উক্ত ব্যক্তিকে তা খেতে বলা হবে। জানতে চাচ্ছি, এ কথার কোনো ভিত্তি আছে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ভাত নষ্ট করলে কিয়ামতের দিন একেকটি ভাত পাহাড়ের সমান হবে- এ জাতীয় কোনো কথা কুরআন হাদিসের কোথাও বর্ণিত হয়নি। তাই এ জাতীয় ভিত্তিহীন কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।
খাবার নষ্ট না করার ব্যাপারে সহিহ হাদিসে যা বর্ণিত হয়েছে সেগুলো বর্ণনা করাই যথেষ্ট। এ জাতীয় ভিত্তিহীন ও বানোয়াট কথা বলার কোনো প্রয়োজন নেই। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
إِنَّ الشَّيْطَانَ يَحْضُرُ أَحَدَكُمْ عِنْدَ كُلِّ شَىْءٍ مِنْ شَأْنِهِ حَتَّى يَحْضُرَهُ عِنْدَ طَعَامِهِ فَإِذَا سَقَطَتْ مِنْ أَحَدِكُمُ اللُّقْمَةُ فَلْيُمِطْ مَا كَانَ بِهَا مِنْ أَذًى ثُمَّ لْيَأْكُلْهَا وَلاَ يَدَعْهَا لِلشَّيْطَانِ فَإِذَا فَرَغَ فَلْيَلْعَقْ أَصَابِعَهُ فَإِنَّهُ لاَ يَدْرِي فِي أَىِّ طَعَامِهِ تَكُونُ الْبَرَكَةُ
‘শয়তান তোমাদের সকল কাজ-কর্মে উপস্থিত হয়। এমনকি তোমাদের কারো খাবারের সময়ও সে উপস্থিত হয়। সুতরাং তোমাদের যদি কারো লোকমা মাটিতে পড়ে যায়, সে যেন তাতে লেগে যাওয়া আবর্জনা সরিয়ে তা খেয়ে ফেলে। শয়তানের জন্য যেন ফেলে না রাখে। খাবার শেষে সে যেন তার আঙ্গুলগুলো চেটে খায়। কেননা সে জানে না, তার খাদ্যের কোন অংশে বারাকাত (কল্যাণ) রয়েছে।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২০৩৩]
অপর আরেক হাদিসে এসেছে,
‘আনাস (রা.) হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন কোনো খাদ্য খেতেন তখন তাঁর আঙ্গুল তিনটি চেটে খেতেন এবং তিনি বলেছেন, তোমাদের কারো লোকমা যদি মাটিতে পড়ে যায় তবে সে যেন তা হতে ময়লা দূর করে এবং খাবারটুকু খেয়ে ফেলে, তা যেন শয়তানের জন্য রেখে না দেয়। আর তিনি আমাদের বাসন মুছে খেতে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, কারণ তোমরা জান না, তোমাদের খাবারের কোন অংশে কল্যাণ রয়েছে।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২০৩৪]
এছাড়া আরো অনেক হাদিসে খাবার নষ্ট না করার গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। গুরুত্ব বুঝানোর জন্য সেগুলো বর্ণনা করা উচিৎ।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/14205/article-details.html