প্রশ্ন
জনৈক ব্যক্তিকে বলতে শুনলাম, প্রচলিত যে কালিমা তাইয়্যেবাটি আছে তা সঠিক। হাদিস দ্বারা বিষয়টি প্রমাণিত নয়। তাই তা পাঠ করা যাবে না। জানতে চাচ্ছি, উক্ত ব্যক্তির বক্তব্য কি সঠিক?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
বর্তমানে প্রচলিত কালিমা তাইয়্যেবাটি ভিত্তিহীন নয়। বরং তা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। নিম্নে কিছু উল্লেখ করা হল। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেন,
‘আমি জান্নাতে প্রবেশের সময় এর দুই পাশে স্বর্ণাক্ষরে তিনটি লাইনে লেখা দেখতে পেলাম। প্রথম লাইনে ছিল: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ। দ্বিতীয় লাইনে লেখা ছিল: যা আমরা অগ্রে প্রেরণ করেছি তা পেয়েছি। যা আমরা খেয়েছি তাতে লাভ করেছি। আর যা আমরা রেখে এসেছি তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আর তৃতীয় লাইনে লেখা ছিল: উম্মত গুনাহগার আর রব ক্ষমাশীল।’ [জামউল জাওয়ামে, হাদিস: ৪/৭৯৯, হাদিস: ৩৮/১৪০৭২]
ইমাম বায়হাকী (রহ.) একটি দীর্ঘ হাদিসে উল্লেখ করেছেন,রাসূল (সা.) বলেছেন,
‘আল্লাহ তাআলা নাজিল করলেন, ‘তাকওয়ার বাণী তাদের জন্য অপরিহার্য করলেন, আর তারাই ছিল এর সর্বাধিক উপযুক্ত ও এর অধিকারী।’ [সূরা ফাতহ, আয়াত: ২৬]। এখানে ‘তাকওয়ার বাণী’ দ্বারা উদ্দেশ্য হল, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।’ [আল আসমা ওয়াস সিফাত, বায়হাকী, হাদিস: ১৯৬]
মুহাদ্দিস শুয়াইব আল আরনাউত উক্ত হাদিসের সনদকে সহিহ বলেছেন। [সহিহ ইবনে হিব্বান, তাহকীক, ১/৪৫২]
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন,
‘রাসূল (সা.)-এর পতাকায় লেখা ছিল, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।’ [আল মুজামুল আওসাত, তবরানী, হাদিস: ২১৯]
ইবনে হাজর আসকালানী (রহ.) তার ইসাবা গ্রন্থে একটি হাদিস উল্লেখ করেছেন,
‘বুরাইদা (রা.) বলেন, একবার আবু যর (রা.) ও নুআইম (রা.) রাসূল (সা.)-এ সন্ধানে বের হলেন। আমি তাদের সাথে ছিলাম। রাসূল (সা.) পাহাড়ের আড়ালে ছিলেন। আবু যর (রা.) বললেন, হে মুহাম্মাদ, তুমি কী বল, তা শোনার জন্য আমরা তোমার কাছে এসেছি। তখন রাসূল (সা.) বললেন, আমি বলি, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ। অতঃপর আবু যর (রা.) এবং তার সঙ্গী তার উপর ঈমান আনে।’ [আল ইসাবা, ৬/৩৬৫]
সুতরাং উক্ত ব্যক্তির কথা সঠিক নয়। তার জ্ঞানের স্বল্পতা থেকে উক্ত বক্তব্যের সৃষ্টি হয়েছে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/13757/article-details.html