প্রশ্ন
আমি শুনেছি, সালমান ফারসী (রা.) দাস ছিলেন। তাঁর দাস মুক্তির ঘটনা জানতে চাচ্ছি।
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
একটি দীর্ঘ হাদিসে তাঁর দাস মুক্তির ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। হাদিসটি উল্লেখ করা হল। হাদিস শরিফে এসেছে,
‘অতঃপর দাসত্বের কারণে সালমান (রা.) বদর ও ওহুদে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। সালমান (রা.) বলেন, অতঃপর রাসূল (সা.) আমাকে বললেন, সালমান তুমি তোমার মনিবের সাথে অর্থের বিনিময়ে দাসত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার চুক্তি কর। আমি চল্লিশ উকিয়া এবং তিনশটি খেজুর গাছ-এর বিনিময়ে মুকাতাবা চুক্তি করলাম; যে তিনশটি গাছ একেবারে চারা লাগানোর গর্ত থেকে প্রস্তুত করতে হবে। তখন রাসূল (সা.) সাহাবীদের বললেন, তোমরা তোমাদের ভাইকে সহায়তা কর। তখন সাহাবীগণ আমাকে সাহায্য করলেন; কেউ দিলেন ত্রিশটি চারা, কেউ বিশটি, কেউ পনেরটি আবার কেউ দশটি; প্রত্যেকেই তার সাধ্য অনুযায়ী দিলেন। এভাবে তিনশটি চারা হয়ে গেল।
রাসূল (সা.) বললেন, যাও এগুলো লাগানোর জন্য গর্ত কর। এরপর আমাকে জানাবে, আমি নিজ হাতে চারাগুলো রোপণ করব। আমি গর্ত করলাম। সাথীরা আমাকে এতে সাহায্য করল। গর্ত করা শেষ হলে রাসূল (সা.)-কে জানালাম। তখন রাসূল (সা.) আসলেন। আমরা এগিয়ে এগিয়ে দিলাম আর রাসূল (সা.) নিজ হাতে সবগুলো চারা রোপণ করলেন। যে সত্তার হাতে সালমানের প্রাণ তাঁর কসম, তিনশ চারার একটিও মরেনি! এভাবে তিনশ খেজুর গাছের শর্ত পূরণ হল। বাকি থাকল চল্লিশ উকিয়া (স্বর্ণ)। একদিন এক যুদ্ধাভিযান থেকে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ হিসেবে রাসূল (সা.)-এর কাছে মুরগির ডিম পরিমাণ স্বর্ণ এল। তখন রাসূল (সা.) আমাকে খোঁজ করলেন, বললেন, ‘মুকাতাবা’ চুক্তিকারী পারস্যের লোকটির কী খবর? অতঃপর আমাকে ডেকে আনা হল। তখন রাসূল (সা.) বললেন, এই নাও, এটি দিয়ে তোমার উপর ধার্যকৃত (চল্লিশ উকিয়া) স্বর্ণ আদায় কর। এ দেখে আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এ (সামান্য পরিমাণ স্বর্ণ) দিয়ে কীভাবে আমার উপর ধার্যকৃত চল্লিশ উকিয়া আদায় হবে?! রাসূল (সা.) বললেন, নাও, এর মাধ্যমেই আল্লাহ তা আদায় করে দেবেন।
সালমান ফারসী (রা.) বলেন, আমি তা নিলাম এবং তাদের (চল্লিশ উকিয়া আদায়ের) জন্য ওজন দিলাম। যে সত্তার হাতে সালমানের প্রাণ তাঁর কসম, ওই ছোট্ট স্বর্ণ টুকরাটি চল্লিশ উকিয়া হল!
এভাবে আমি আমার উপর ধার্যকৃত স্বর্ণও আদায় করলাম এবং দাসত্ব থেকে মুক্ত হলাম।’ [মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৩৭৩৭]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/12889/article-details.html