প্রশ্ন
জনৈক ব্যক্তি রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে এক বাক্যে একশত তালাক দিয়েছে। প্রশ্ন হল, এর দ্বারা কয় তালাক পতিত হবে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
এক বাক্যে একশত তালাক দিলে তিন তালাক পতিত হয়ে যাবে এবং স্বামী স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ হয়ে যাবে। এখন আর সে তার স্ত্রীর সাথে ঘর সংসার করতে পারবে না। তবে স্ত্রীর যদি অন্যত্র বিয়ে হয়, সেই স্বামীর সাথে তার সহবাস হয় এবং পরবর্তীতে সেই স্বামী থেকে বিচ্ছেদ ঘটে তাহলে উক্ত ব্যক্তি তাকে পুনরায় বিয়ে করতে পারবে। হাদিস শরিফে এসেছে,
ইবনে সীরীন আলকামা (রহ.) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,…… আরেক ব্যক্তি এসে বলল, সে ব্যক্তি তার স্ত্রীকে একশ তালাক দিয়েছে। তিনি (আব্দুল্লাহ (রা.)) তাকে জিজ্ঞেস করলেন: সেটি কি এক বাক্যে ছিল? সে জবাবে বলল, তা এক বাক্যেই ছিল। তখন তিনি বললেন, লোকেরা কি এর মাধ্যমে তোমার নিকট হতে তোমার স্ত্রীকে আলাদা করে দিতে চায়? সে বলল, জ্বি, হাঁ। তখন আব্দুল্লাহ (রা.) বললেন, আল্লাহ যেভাবে তালাক দিতে আদেশ করেছেন, সেইভাবে যে ব্যক্তি তালাক প্রদান করে, তবে আল্লাহ তাআলা (তার জন্য) তালাকের বিধান তো পরিষ্কারভাবেই বর্ণনা করে দিয়েছেন। আর যে ব্যক্তি নিজেই বিষয়টি সন্দেহপূর্ণ করে ফেলেছে, তার সন্দেহপূর্ণ ব্যাপারটি আমরা তার উপরই ন্যস্ত করব। আল্লাহর কসম! তোমরা নিজেরা (হক ও বাতিলকে মিশিয়ে) বিষয়টিকে সন্দেহপূর্ণ করবে, আর আমরা তার দায়ভার বহন করবো, তাতো হতে পারে না। বরং বিষয়টি তোমরা যেমন বলেছো, তেমনি।’ [সুনানে দারেমী, হাদিস: ১১১]
আরেক হাদিসে এসেছে,
‘আলকামা (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি ইবনে মাসউদ (রা.)-এর কাছে এসে বলল, আমি আমার স্ত্রীকে ৯৯ তালাক দিয়েছি। মানুষকে জিজ্ঞাসা করলে আমাকে বলা হল, আমার স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। তখন ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন, লোকেরা তো তোমার ও তোমার স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো পছন্দনীয় মনে করছে। তখন সেই লোকটি বলল, আল্লাহ আপনার প্রতি রহম করুন। আপনার কী অভিমত? (রাবী বলেন,) লোকটি সম্ভবত মনে করেছিল, তিনি তাকে (তালাক না হওয়ার) অবকাশ দিবেন। তখন ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, তিনটি তালাকের মাধ্যমেই তোমার স্ত্রী বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। আর বাকীগুলো দ্বারা তুমি আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধাচারণ করেছ।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১২১৯৭]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/12280/article-details.html