প্রশ্ন
জনৈক বক্তার মুখে শুনলাম, আল্লাহ তাআলা রাসূল (সা.)-এর নূরকে চার ভাগে ভাগ করে প্রথম ভাগ দ্বারা কলম, দ্বিতীয় ভাগ দ্বারা লওহে মাহফুজ, তৃতীয় ভাগ দ্বারা আরশ সৃষ্টি করেন। চতুর্থ ভাগকে আবার চার ভাগ করে তার দ্বারা অবশিষ্ট সকল বস্তুকে পর্যায়ক্রমে সৃষ্টি করেন। আমার প্রশ্ন হল, উক্ত বক্তার বক্তব্য কি সঠিক?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
রাসূল (সা.) নূরের তৈরি নন- বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট। কারণ তিনি মানুষ ছিলেন। আর মানুষকে তৈরি করা হয়েছে মাটি থেকে। কুরআন মাজিদে স্পষ্ট ভাষায় ইরশাদ হচ্ছে,
إِنَّ مَثَلَ عِيسَى عِنْدَ اللَّهِ كَمَثَلِ آدَمَ خَلَقَهُ مِنْ تُرَابٍ
‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের মত, তিনি তাকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন।’ [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৫৯]
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন,
خُلِقَتِ الْمَلَائِكَةُ مِنْ نُورٍ، وَخُلِقَ الْجَانُّ مِنْ مَارِجٍ مِنْ نَارٍ، وَخُلِقَ آدَمُ مِمَّا وُصِفَ لَكُمْ
‘ফেরেশতাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে নূর থেকে। জিনদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে ধোঁয়া বিহীন অগ্নি থেকে। আর আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে ঐ বস্তু থেকে (মাটি থেকে) যার বিবরণ তোমাদের কাছে পেশ করা হয়েছে।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৯৯৬]
যেহেতু রাসূল (সা.) নূরের তৈরি ছিলেন, তাই তাঁর নূরকে চার ভাগ করে বিভিন্ন বস্তু সৃষ্ট করার প্রশ্নই উঠে না। কাজেই উক্ত বক্তব্য সঠিক নয়। বরং তা কুরআন হাদিসের সুস্পষ্ট রেফারেন্সের পরিপন্থি।
সম্ভবত উক্ত বক্তা সাহেব একটি জাল হাদিসের ভিত্তিতে এই তথ্যটি প্রদান করেছেন। অথচ জাল হাদিসকে হাদিস হিসেবে বর্ণনা করা কোনো মুসলমানের জন্য বৈধ নয়। কাজেই এ জাতীয় বক্তার বয়ান শোনা থেকে বিরত থাকা উচিৎ।
আয যয়ীফা ১/৪৭৪
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
উত্তর দিচ্ছেন:
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
সূত্র: https://www.drkhalilurrahman.com/10316/article-details.html